বাংলাদেশিরা সুষ্ঠুভাবে হজ করেছেন : ধর্মমন্ত্রী
ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বলেছেন, এ বছর বাংলাদেশ থেকে আগত সর্বমোট এক লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে সুষ্ঠুভাবে হজ পালন করতে সক্ষম হয়েছেন। হজযাত্রীদের এ সংখ্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে যেকোনো সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ সংখ্যক হজযাত্রী নিয়ে সুন্দরভাবে হজ পালন করতে পারায় তিনি আল্লাহপাকের শুকরিয়া আদায় করেন।
গত ৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের মক্কা আল-মোকাররমায় বাংলাদেশ হজ অফিসে অনুষ্ঠিত হজ-উত্তর এক পর্যালোচনা সভাশেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এসব তথ্য জানান ধর্মমন্ত্রী। আজ বৃহস্পতিবার সরকারি এক তথ্য বিবরণীতে এসব জানানো হয়।
ধর্মমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব সরকারের তথ্য অনুসারে এ বছর সারা পৃথিবী থেকে ২৩ লাখ ৫২ হাজার হজযাত্রী হজ সম্পাদন করেছেন। এঁদের মধ্যে সৌদি আরবের বাইরে থেকে এসেছেন ১৭ লাখ ৫২ হাজার। এ পর্যন্ত সৌদি আরবে সর্বমোট ৭৪ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন।
তবে মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনের সর্বশেষ তথ্যমতে, সৌদি আরবে এবার হজ করতে এসে আজ বুধবার পর্যন্ত ৮১ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৬৫ জন ও নারী ১৬ জন। এর মধ্যে মক্কায় ৫৮ জন, মদিনায় সাতজন ও মিনায় ১৬ জন মারা গেছেন।
ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশনে সাংবাদিকদের বলেন, এ বছর হজ ব্যবস্থাপনায় সরকারি হজযাত্রীদের জন্য আরাফাতের তাঁবুতে প্রথমবারের মতো শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের সাহায্যের জন্য সরাসরি হটলাইন চালু করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে অনলাইন মেডিকেল প্রোফাইল এন্ট্রি করে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। হজযাত্রীদের হারানো লাগেজ দ্রুত পাওয়ার জন্য অনলাইন সুবিধা চালু করা হয়েছে। চিকিৎসাসেবায় উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আইটি সার্ভিসের মাধ্যমে হারানো হজযাত্রীদের নিজ নিজ বাসা বা তাঁবুতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিনার মাঠে অতিরিক্ত হজকর্মী নিয়োগ করে হারানো হাজিদের স্ব-স্ব তাঁবুতে দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে উন্নততর করার চেষ্টা করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, হজ একটি দ্বিপক্ষীয় ব্যবস্থাপনা। এখানে বাংলাদেশ সরকার এবং সৌদি আরব সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের অংশগ্রহণ রয়েছে। বাংলাদেশ এবং সৌদি আরব অংশে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় প্রক্রিয়ায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ছোট খাটো সমস্যা পরিলক্ষিত হয়েছে। ভবিষ্যতের হজ ব্যবস্থাপনায় এ বিষয়গুলোর প্রতি যথাযথ দৃষ্টি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অধ্যক্ষ মতিউর রহমান আরো বলেন, যেসব বেসরকারি হজ এজেন্সি হজযাত্রীদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে সেবা প্রদানে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে এবং শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
ধর্মমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের হজযাত্রীরা হজের কার্যাবলি সম্পন্ন করে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে ফিরতে শুরু করবেন। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইটের শেষ তারিখ ৫ অক্টোবর। ফিরতি ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহনের জন্য এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ব্রিফিংকালে আরো উপস্থিত ছিলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল জলিল, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ, হজ প্রশাসনিক দলের দলনেতা ও অতিরিক্ত সচিব মো. ফয়েজ আহমেদ ভূইয়া, যুগ্ম সচিব (হজ) মো. হাফিজ উদ্দিন, কনসাল জেনারেল (জেদ্দা) এফ এম বোরহান উদ্দিন, মক্কা আল মোকাররমার কাউন্সেলর (হজ) মুহাম্মাদ মাকসুদুর রহমানসহ হজ প্রশাসনিক দল, হজ চিকিৎসকদল ও হজ আইটি দলের প্রতিনিধিরা।