রাঙামাটিতে বৃহস্পতিবার হরতাল ঘোষণা
আওয়ামী লীগ নেতা অরবিন্দ চাকমা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাঙামাটি জেলায় কাল বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ঘোষণা দিয়েছে জেলা যুবলীগ।
হামলার প্রতিবাদে আজ বুধবার বিকেলে রাঙামাটি শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। শহরের পৌর চত্বর থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে নেতাকর্মীরা জুরাছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা অরবিন্দকে হত্যা ও বিলাইছড়িতে রাসেল মার্মার ওপর হামলার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করেছেন। এ সময় হরতালের ঘোষণা দেয় রাঙামাটি জেলা যুবলীগ।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সহসভাপতি নিখিল কুমার চাকমা, সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা মাতব্বর, জেলা যুবলীগের সভাপতি আকবর হোসেন চৌধুরী, মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ঝর্ণা খীসা ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা।
রাঙামাটি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নূর মোহাম্মদ কাজল জানিয়েছেন, নিহত অরবিন্দ জুরাছড়ি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি উপজেলা যুবলীগেরও সহসভাপতি, এই কারণেই আমরা যুবলীগের পক্ষ থেকে হরতাল ডেকেছি। রাঙামাটির প্রতিটি উপজেলায়ও কঠোর হরতাল পালিত হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে দুপুরে রাঙামাটি সদর হাসপাতাল মর্গে অরবিন্দ চাকমার লাশ দেখতে যান সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা দীপংকর তালুকদার। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চায় এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অস্ত্রের মজুদ গড়েছে, তারাই আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা ও হামলা করেছে। প্রশাসন যদি এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।
এ সময় একই দিন হামলায় আহত বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাসেল মার্মা হামলার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করেছেন।
রাসেল মার্মা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যারা হত্যা-খুনের রাজনীতি করে, সেই আঞ্চলিক দল, জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র ক্যাডাররাই আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
এদিকে জুরাছড়িতে মঙ্গলবারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন জুরাছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাসেদ।
মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় জুরাছড়ি উপজেলার খাগড়াছড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অরবিন্দ চাকমাকে (৪৫) গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। একই সময় বিলাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি রাসেল মার্মাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেদম মারপিট করা হয়। আওয়ামী লীগ দুটি ঘটনার জন্যই সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করেছে। তবে জনসংহতি সমিতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
একই দিন নানিয়ারচর উপজেলায় ইউপিডিএফ কর্মী অনাদী রঞ্জন চাকমাকেও গুলি করে হত্যা করা হয়। ইউপিডিএফ এই ঘটনার জন্য ইউপিডিএফকে (গণতান্ত্রিক) দায়ী করেছে। সংগঠনটি নিজেদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।