শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে চিকিৎসকরা রাস্তায়
রাজন, রাকিব বা রবিউলের ওপর যে নিষ্ঠুরতার সাক্ষী হলো সমাজ, তা বিবেকবান মানুষকে আরো বহুদিন ভোগাবে, এ কথা বলাই যায়। নির্যাতন করে মেরে ফেলার এমন ঘটনা অসংখ্য। শিশুবিষয়ক একটি বেসরকারি সংস্থার হিসাবে, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত এমন নির্মম মৃত্যুযন্ত্রণার শিকার হয়েছে ১৯১ জন। শিশু অধিকার ফোরাম বলছে গত বছর জুলাই মাসেই ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫০ শিশু। আর মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রতিবেদন অনুযায়ী গত বছর সারা দেশে ৩২২ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।
urgentPhoto
শিশু ধর্ষণ, নির্যাতন ও হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে এবার রাস্তায় নেমেছেন শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। শিশুদের ওপর বর্বর আচরণের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে শামিল হয়েছিলেন দেশের খ্যাতনামা শিশু বিশেষজ্ঞরা। শিশু নির্যাতন রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন তাঁরা। দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ মানববন্ধন করেন চিকিৎসকরা। মানববন্ধনের মাধ্যমে তাঁরা জানালেন, মানুষ জাগ্রত হলেই মোকাবিলা করা যাবে শিশু হত্যাকারীদের মতো বিকৃত মস্তিষ্কের লোকদের।
সমাজের কিছু মানুষের এসব বিকৃত ও বর্বর আচরণ প্রতিরোধ করা না গেলে জাতির ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলে মনে করেন জাতীয় অধ্যাপক ডাক্তার এম আর খান। তিনি আরো বলেন, ‘মানবতা বোধ, নৈতিকতা বোধ এবং তার দয়ামায়া অনেক কমে যাচ্ছে। তারা এখন নিজেকে নিয়ে বিব্রত থাকে। আর কারো কথা চিন্তা করে না। তারও তো শিশু আছে। তার কথা যদি চিন্তা করে তাহলে এরা মারবে না। এই যে নৃশংসতা, এটা দায়িত্ব শুধু সরকারের একার না। সামাজিক আন্দোলন শুরু করতে হবে। যাতে সবাই একসঙ্গে এর প্রতিবাদ করে, প্রতিরোধ করে। আপনি যতি বলবান হন তাহলে প্রতিরোধ করেন। যদি দুর্বল হন তাহলে প্রতিবাদ করেন।’
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মো. শহীদুল্লাহ বলেন, সবাইকে আমরা একটু জাগ্রত করতে চাই। আমরা যেন শিশুদের জন্য নিরাপত্তা দেই, তাদের খেলার ব্যবস্থা করি, শিক্ষার ব্যবস্থা করি এবং তাদের ওপর যেন কোনো রকম নির্যাতন না করি।
মানুষের বিবেক জাগ্রত করতে জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে বলে জানান চিকিৎসকরা। সেই সাথে শিশু নির্যাতনকারীদের যথাযথ শাস্তিও দাবি করেন তাঁরা। আর কোনো শিশুর পরিণতি যেন রাজন-রাকিবের মতো না হয় সেই সমাজ গঠনে সবার অংশগ্রহণ চান এই শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।