বিমানের প্রথম হজ ফ্লাইট রোববার
চলতি বছর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম হজ ফ্লাইট বিজি-১০১১ আগামী ১৬ আগস্ট (রোববার) সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী ফ্লাইটের হজযাত্রীদের বিদায় জানাবেন।
এ বছর হজ ফ্লাইট ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৫১ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে জেদ্দা যাবেন বলে বার্তা সংস্থা বাসস জানিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার আশকোনায় হজক্যাম্পে হজ্জ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন।
এ দিকে নির্ধারিত সময়ে, নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ১৬ আগস্ট হজ ফ্লাইট বিজি-৩০১১ দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন, বিজি-৫০১১ রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে।
চট্টগ্রাম এবং সিলেট থেকেও এ বছর যথারীতি প্রয়োজনীয় সংখ্যক হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এসব হজযাত্রীর ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে বিমান এরই মধ্যেই নিজস্ব সুপরিসর বোয়িং ট্রিপল সেভেন উড়োজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটেও কিছু হজযাত্রী সৌদি আরবে যাবেন।
বিমান বাংলাদেশ সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজযাত্রী পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন মোট দুই হাজার ৬০০ জন অবশিষ্ট ৯৯ হাজার ১৫৮ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ বছর বিমানে যাবেন মোট দুই হাজার ৫৭৫ জন হজযাত্রী। অবশিষ্ট ৪৮ হাজার ৪২৫ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে হজ্জযাত্রীদের ইকোনমি ক্লাসে বিমান ভাড়া ১৫১৫ মার্কিন ডলার এবং বিজনেস ক্লাসে বিমান ভাড়া দুই হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে দেয় অন্যান্য কর। ঢাকা থেকে জেদ্দা প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক ৭ ঘণ্টা।
বিমান সূত্র জানায়, দুই মাসব্যাপী হজ ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ২৮৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ২২৪ ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট।
১৬ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হজ পূর্ববর্তী মোট ১৪৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে (ডেডিকেটেড-১১৫ এবং শিডিউল-৩০)। হজ্জ পরবর্তী ১৪০টি ফ্লাইট চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১০৯ এবং শিডিউল-৩১)। দুই হাজার ৫৭৫ জন সরকারি ব্যবস্থাপনার যাত্রীসহ মোট ৫১ হাজার জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য ক্যারিয়ার হিসেবে বিমানকে ব্যবহার করবেন। হজফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে।
বিমানের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রত্যেক হজ্জযাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক দুই পিস ৩২ কেজি মালামাল বিমানে ও বিজনেস ক্লাসের জন্য সর্বাধিক দুই পিস ৪২ কেজি এবং কেবিন ব্যাগেজে সাত কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রতি প্রিস ব্যাগেজের ওজন ২৫ কেজির বেশি হতে পারবে না। প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য পাঁচ লিটার জমজমের পানি ঢাকায় নিয়ে আসা হবে এবং হাজিরা ঢাকা ফেরত আসার পর তাঁদের তা প্রদান করা হবে।
হাজিরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, যেকোনো ধারালো বস্তু যেমন ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলান, কান পরিষ্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন অ্যারোসল এবং ১০০ এমএলের বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী হাজিদের কষ্ট লাঘব করার জন্য ফিরতি ফ্লাইটের (জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ) ব্যাগেজ জেদ্দা এয়ারপোর্ট এ চেক্-ইনের সময় বিমানে গ্রহণ করা হবে না। পরিবর্তে এই ব্যাগেজ আগেই মক্কা ও মদিনায় বিমান নির্ধারিত স্থানে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে যা বিমানের ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট হাজিদের বহনকারী ফ্লাইটেই পরিবহন করা হবে।
বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটগুলোর চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। তবে শিডিউল ফ্লাইটের হজযাত্রীদের যাত্রাপূর্ব আনুষ্ঠানিকতা যথানিয়মে বিমানবন্দরে সম্পন্ন করা হবে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সাউদিয়া হজযাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা রুটে আনা-নেওয়া করবে। ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আট লাখ ২৮ হাজার ৩৮৭ জন হাজি হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সেবা গ্রহণ করেছেন।