নির্যাতনের ৯ দিন পর মারা গেল শিশুশ্রমিক
লক্ষ্মীপুরে ব্যবসায়ীর পিটুনিতে আহত শিশুশ্রমিক মোহাম্মদ রমজান (১২) নয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে মারা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
আজ বুধবার দুপুরে রমজানের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই লক্ষ্মীপুরের বাগবাড়ী এলাকায় দাফন করা হয়েছে। শিশু রমজান লক্ষ্মীপুর পৌর এলাকার বাঞ্চানগর এলাকার তাজুল ইসলামের ছেলে।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর নাম আলী হোসেন। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার রসুলগঞ্জ এলাকায়। তিনি একটি তরল দুধ বিপণন প্রতিষ্ঠানের ডিলার। শহরের বাগবাড়ী এলাকায় মেসার্স সৌদিয়া ট্রেডার্স নামে তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
রমজানের বড় ভাই মো. সুজন বলেন, ‘আলী হোসেন গত ১০ আগস্ট আমার ভাইকে দিয়ে কাভার্ড ভ্যান থেকে দুধের কার্টন নামান। এ সময় রমজানের মাথায় দুটি কার্টন দেওয়া হয়। অতিরিক্ত ভার বহন করতে না পারায় রমজান পা ফসকে পড়ে যায়। দুধের প্যাকেট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে আলী হোসেন রমজানকে রড দিয়ে মাথায় ও কোমরে আঘাত করেন। এতে রমজান মারাত্মক আহত হয়। পরে তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মাথা থেকে দুধভর্তি দুটি কার্টনসহ পড়ে রমজান ঘাড়ে ব্যথা পায়। পরে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে মারা যায়।
রড দিয়ে পেটানোর কথা অস্বীকার করে আলী হোসেন বলেন, ‘রমজানের মাথায় দুটি কার্টন দিয়েছিলাম। এটা ঠিক। পরে কার্টনের ভারে রমজান পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যায়।’ শিশুর মাথায় কার্টন দেওয়ার কারণে জানতে চাইলে আলী বলেন, ‘রমজান আগেও এ রকম ভারী ভারী পণ্য বহন করেছে।’
লক্ষ্মীপুরের সদর থানার সহকারী পুলিশ সুপার নাসিম মিয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’