‘বন্দুকযুদ্ধে’ এগিয়ে পুলিশ
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এ তিন মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৯ জন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়নের (র্যাব) সঙ্গে ১৬ জন, গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সঙ্গে পাঁচজন এবং বাকি ছয়জন অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থার আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মার্চ মাস শেষে প্রকাশিত তাদের এক পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। দেশের আটটি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণ করে এ উপাত্ত পাওয়া গেছে।
আসকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কারা হেফাজতে ২৫ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকধারী একদল ব্যক্তি চারজনকে আটক করে। তাঁদের মধ্যে দুজনকে ফেরত দেওয়া হয় এবং একজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত তিন মাসে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) হাতে নির্যাতনে কমপক্ষে তিনজন নিহত, সাতজন আহত ও তিনজন অপহৃত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি দেশের আটটি স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
এ সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৬৫ সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি ও দায়িত্ব পালনকালে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পাঁচটি বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলেও আসকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্দিরে ১৭টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয় এবং মন্দির ও পূজাচত্বরেও হামলা করা হয়েছে।
আসকের ওই প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, বছরের প্রথম তিন মাসে ১৮৭ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে এবং দুজন আত্মহত্যা করেছেন। ২১ জন নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।
যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫৫ নারী। তাঁদের মধ্যে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, চারজন আত্মহত্যা করেছেন। নয়জনকে স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১০৭ নারী নিজেদের পরিবারের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। এতে নিহত হয়েছেন ৭৫ জন। নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৪ জন। ১৮ জন নারী শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
প্রতিবদেনে আরো বলা হয়, গত তিন মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৪২২ শিশুকে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছে। এদের মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে ৭১ শিশু এবং আত্মহত্যা করেছে ২৬ জন। যৌন নিপীড়নের ২৭টি মামলা করা হয়েছে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া ১১ গৃহকর্মী বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজনের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে দেশে ১০৯টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ১১ জন নিহত ও এক হাজার ৪৮৮ জন আহত হয়েছেন।