মিয়ানমার থেকে ফিরছে আরো ১২৫ বাংলাদেশি

মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া আরো ১২৫ বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর কমান্ডার কর্নেল এম আনিসুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
আনিসুর রহমান জানান, বান্দরবান জেলার ঘুমধুম জিরো পয়েন্টের বিপরীতে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়ায় এক পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই ১২৫ জনকে দেশে ফেরত আনা হবে। বৈঠকে বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধি, একজন চিকিৎসকসহ ১৮ সদস্যের বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল উপস্থিত থাকবে।
আনিসুর জানান, ওই দলে তিনি পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকবেন। এতে নেতৃত্ব দেবেন কক্সবাজার বিজিবির ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রবিউল ইসলাম।
এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, দেশে ফেরত আসার অপেক্ষায় থাকা ১২৫ জনের তালিকায় নতুন করে কয়েকজন বাড়তেও পারে। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষে আলোচনা চলছে। ফেরত আসার তালিকায় থাকা ১২৫ জন ১৪টি জেলার বাসিন্দা। তাদের বেশির ভাগই কক্সবাজারের। এদের মধ্যে ২০-২৫ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু-কিশোরও রয়েছে।
আসিফ মুনীর আরো জানান, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে কক্সবাজার, বান্দরবান, ফেনী, ভোলা, চাঁদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও মেহেরপুর জেলার নাগরিক রয়েছে। তারা দেশের সীমান্তে প্রবেশের পর থেকে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা, যাতায়াত সুবিধাসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা করতে প্রস্তুতি নিয়েছে আইওএম।
গত ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই এবং ১০ আগস্ট চার দফায় শনাক্ত হওয়া ৫০১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে গত ২১ মে ২০৮ জন ও ২৯ মে ৭২৭ জনকে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার করেছিল দেশটির নৌবাহিনী। এর পর থেকে বাংলাদেশি হিসেবে দাবি করা ব্যক্তিদের তালিকা নিয়ে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করেছে। ওই তালিকায় শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশিদের পর্যায়ক্রমে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) তোফায়েল আহমদ জানান, বাংলাদেশি হিসেবে শনাক্ত হওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পতাকা বৈঠক শেষে ঘুমধুম সীমান্ত থেকে বাসে করে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে ইমিগ্রেশন-সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপরই তাদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
তোফায়েল আহমেদ আরো জানান, তালিকায় থাকা ২০-২৫ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশু-কিশোরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে আদালতের নির্দেশনার আবেদন জানানো হবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, তাদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।