জমি নিয়ে বিরোধে কলেজছাত্রকে হত্যা, দুই ভাই আটক
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের কালিখাপুর এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইউনুস খান (১৮) নামের এক কলেজছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ওই গ্রামের দুই ভাইকে আটক করেছে পুলিশ। আটক দুই ভাই হলেন হাসিবুল ইসলাম (৫০) ও জবিরুল ইসলাম (৪৫)।
ইউনুস পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন। তিনি ওই এলাকার সফিজুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নিহত ছাত্রের বাবা সফিজুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী পরমত আলীর ছেলে হাসিবুল ও জবিরুলদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। গত শনিবার দুপুরে হাসিবুল তাঁর লোকজন নিয়ে ওই জমিতে ঘর তুলতে যান। এ সময় সফিজুল ও তাঁর ছেলে ইউনুস বাধা দিলে হাসিবুল, জবিরুলসহ তাদের লোকজন লাঠি দিয়ে ইউনুসকে বেধড়ক মারপিট করে।
এতে ইউনুস অচেতন হয়ে পড়লে প্রথমে তাঁকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর গতকাল রোববার গভীর রাতে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইউনুস খান মারা যান।
খবর পেয়ে আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইজারউদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত হাসিবুলকে আটক করে। পরে স্থানীয় লোকজন অপর অভিযুক্ত জবিরুলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় পঞ্চগড় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
নিহত ইউনুস খানের বাবা সফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একজন ভ্যানচালক। ভ্যান চালিয়ে কোনো রকমে ছেলেদের লেখাপড়া চালিয়ে আসছি। আমার পৈতৃক ৫০ শতক জমিই সম্বল। এটুকুতে আমার ভিটেবাড়ি। ৫০ শতক জমির মধ্যে আমার দখলে রয়েছে ২৫ শতক। অবশিষ্ট জমি হাসিবুল ও জবিরুলরা দখলে রেখেছে। আমি ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলতামাস হুসাইন লেলিন জমি সংক্রান্ত বিরোধের কথা স্বীকার করে জানান, এ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বিচার-সালিশ হয়েছে। হাসিবুল ও জবিরুলরা বিচারেও আসে না, আবার জমির কাগজপত্রও দেখায় না। এমনকি সফিজুল ইসলাম তাঁর দখলে থাকা জমি ছেড়ে দিতে বললেও তারা তা দেয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘হাসিবুল ও জবিরুল ইউনুস খানকে পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে এলাকার লোকজন আমাকে জানিয়েছে।’
পঞ্চগড় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ইজারউদ্দিন জানান, রংপুরে মারা যাওয়ায় সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে ইউনুসের লাশ তাঁর গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।