মিয়ানমার থেকে ফিরল আরো ১২৫ জন

মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার হওয়া অভিবাসন প্রত্যাশী আরো ১২৫ বাংলাদেশি আজ দেশে ফিরেছে। বান্দরবানের ঘুমধুম জিরো পয়েন্টের বিপরীতে মিয়ানমারের ঢেঁকিবনিয়ায় পতাকা বৈঠক শেষে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। urgentPhoto
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানায়, ফিরে আসা অভিবাসীদের মধ্যে ২৭ জন শিশু রয়েছে। ১২৫ জনের বাড়ি ১৪ জেলায়। এর মধ্যে কক্সবাজারের রয়েছে ৮৬ জন।
বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমান জানান, এর আগে চার দফায় বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পঞ্চমবারে ১২৫ জনকে নিয়ে আনা হয়েছে। মিয়ানমারের কনসুলেট কার্যালয় তাদের শনাক্ত করেছে। তার পরই তাদের ফেরত আনা হয়েছে। আরো প্রায় ১০০ জনের মতো সেখানে রয়েছে। তাদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে।
কক্সবাজার বিজিবি-১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদল সকাল সাড়ে ১০টায় পতাকা বৈঠকে যোগ দিতে মিয়ানমার যায়। বৈঠকে পর্যবেক্ষক হিসেবে ছিলেন বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল এম আনিসুর রহমান।
মিয়ানমারের ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সকাল ১১টায় শুরু হয় পতাকা বৈঠক। বৈঠক শেষে দুপুর দেড়টায় ঘুমধুম মৈত্রী সেতু পার হয়ে ১২৫ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে দেশে ফিরে প্রতিনিধিদল। এসব অভিবাসী দুর্বিষহ যাত্রা শেষে দেশের মাঠিতে পা রেখে যেন নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। তবে মিয়ানমারের ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেছে এক অভিবাসন প্রত্যাশী।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার আসিফ মুনীর জানান, ফেরত আসার তালিকায় থাকা ১২৫ জন ১৪টি জেলার বাসিন্দা, তাদের বেশির ভাগই কক্সবাজারের। এদের মধ্যে ২০-২৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু-কিশোরও রয়েছে।
অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে কক্সবাজার, বান্দরবান, ফেনী, ভোলা, চাঁদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ ও মেহেরপুর জেলার নাগরিক রয়েছে। তাদের দেশের সীমান্তে প্রবেশের পর থেকে বাড়ি পৌঁছানো পর্যন্ত খাদ্য, চিকিৎসা ও যাতায়াত সুবিধাসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা করতে প্রস্তুতি নিয়েছে আইওএম।
এর আগে গত ৮ ও ১৯ জুন, ২২ জুলাই এবং ১০ আগস্ট ৪ দফায় শনাক্ত হওয়া ৫০১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হয়েছিল। এদের মধ্যে গত ২১ মে ২০৮ জন ও ২৯ মে ৭২৭ জনকে মিয়ানমারের জলসীমা থেকে উদ্ধার করেছিল দেশটির নৌবাহিনী। এরপর বাংলাদেশি হিসেবে দাবি করা তালিকা নিয়ে উভয় দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। ওই তালিকায় শনাক্ত হওয়া বাংলাদেশিদের পর্যায়ক্রমে দেশে ফেরত আনা হচ্ছে।
দেশে ফেরার পর ঘুমধুম সীমান্ত থেকে বাসযোগে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় অভিবাসীদের। সেখানে তাদের ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট কাজ শেষ করে তথ্য সংগ্রহের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর পরই তাদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। তবে তালিকায় থাকা ২০-২৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু-কিশোরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানতে আদালতের নির্দেশনার আবেদন জানানো হবে। এরপর আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।