৫৭ ধারা বাতিলে এবার ১১ নাগরিকের নোটিশ
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল চেয়ে এবার সরকারের তিন সচিবের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন দেশের ১১ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নাগরিকদের পক্ষে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।
আইনসচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশদাতা ১১ জন হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ কামাল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আকমল হোসেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক গীতি আরা নাসরিন ও ফাহমিদুল হক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনু মুহাম্মদ, ঢাকার নাগরিক আবদুস সালাম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সাংস্কৃতিক কর্মী অরূপ রাহী ও লেখক রাখাল রাহা।
নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে স্বীকৃত মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অঙ্গীকারের সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সাংঘর্ষিক।
এর আগে গতকালই ৫৭ ধারা বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়। জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির রিটটি করেন।
এদিনই তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিল চেয়ে চার সচিবকে একটি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী আকন্দ। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসচিব এবং তথ্যসচিবকে পাঠানো ওই নোটিশে ধারা দুটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যাহা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়িলে, দেখিলে বা শুনিলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হইতে পারেন অথবা যাহার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করিতে পারে বা এ ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহা ইহলে তাহার এই কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করিলে তিনি অনধিক চৌদ্দ বৎসর এবং অন্যূন সাত বৎসর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।’