৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিলে সরকারকে নোটিশ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিল করতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ আজ বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও তথ্যসচিবসহ চারজনকে ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় উল্লেখ আছে, ইলেকট্রনিক ফর্মে মিথ্যা, অশ্লীল অথবা মানহানিকর তথ্য প্রকাশ-সংক্রান্ত অপরাধ ও এর দণ্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে—(এক) কোনো ব্যক্তি যদি ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা কারো মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে—এ ধরনের তথ্যের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি দেওয়া হয়, তা হলে তার এই কাজ একটি অপরাধ বলে গণ্য হবে; (দুই) কোনো ব্যক্তি উপধারা-১-এর অধীন অপরাধ করলে তিনি অনধিক ১৪ বছর ও অন্যূন ৭ বছর কারাদণ্ডে এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এ ছাড়া ৮৬ ধারায় বলা হয়েছে, এ আইন বা তার অধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের অধীন সরল বিশ্বাসে করা কোনো কাজের ফলে কোনো ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা হওয়ার আশঙ্কা থাকলে, সে জন্য সরকার, নিয়ন্ত্রক, উপনিয়ন্ত্রক, সহকারী নিয়ন্ত্রক বা তাদের পক্ষে কার্যরত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা বা অন্য কোনো প্রকার আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাবে না।
ইউনুস আলী আকন্দ নোটিশে বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মাধ্যমে দেশের সব নাগরিকের বিরুদ্ধে যে বিষয়ে মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, একই আইনের ৮৬ ধারায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ওই বিষয়ে মামলা করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নোটিশে আরো বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী দেশের সব নাগরিকেরই সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি আইনের দুটি ধারার মাধ্যমে নাগরিকদের দুই শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে, যা সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ।
নোটিশের ব্যাপারে ইউনুস আলী আকন্দ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘একই দেশে এ বিষয়ে দুই ধরনের আইন অবৈধ। নোটিশে এ বিষয়েই জবাব চাওয়া হয়েছে। ৫৭ ও ৮৬ ধারা বাতিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হাইকোর্টে রিট করা হবে।’