মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমানোর উদ্যোগ নিন
মা ও শিশু মৃত্যু নির্মূলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) পরবর্তী সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
আজ বৃহস্পতিবার ভারতের নয়াদিল্লিতে ‘প্রতিরোধযোগ্য শিশু ও মাতৃমৃত্যু নির্মূলে বৈশ্বিক আহ্বান-২০১৫’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনের বক্তৃতায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ নয়াদিল্লির হোটেল তাজ-এ দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ইথিওপিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ইউএসএইড, ইউনিসেফ, বিল অ্যান্ড মেলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশন এবং টাটা ট্রাস্ট যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ২৪ দেশের মন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশেষজ্ঞ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতিমধ্যে আগামী ২০১৬-২০২১ মেয়াদি প্রকল্প কার্যক্রমের পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছে। এতে এমডিজি পরবর্তী সময়ের কর্মসূচি প্রণয়নে উন্নয়ন সহযোগী ও সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা ও অংশীদারত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।’ মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘অর্থনীতির দ্রুত অগ্রগতির সাথে সাথে বাংলাদেশ একটি উন্নত স্বাস্থ্যমান অর্জনের পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার একটি স্বাস্থ্যবান, সুখী এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মা ও শিশু মৃত্যু হার হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সদিচ্ছা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই বাংলাদেশ এশিয়ার বেশির ভাগ দেশকে পেছনে ফেলে শিশু মৃত্যু হারের সহস্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১০ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছে। মাতৃমৃত্যু হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রাও অর্জনের পথে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পোলিও মুক্ত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচির সাফল্য আজ সারা বিশ্বে প্রশংসিত। সর্বাধুনিক নিউমোঙ্কাল ও রোটা ভাইরাস ভ্যাকসিনসহ দেশে এখন শিশুদের নয়টি ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। দেশের প্রায় শতভাগ শিশু টিকাদান কর্মসূচির কাভারেজের আওতায় আছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম আজ বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের জন্য মডেল হিসেবে চিহ্নিত। জাতিসংঘ মহাসচিব, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক, কমনওয়েলথ মহাসচিবসহ আন্তর্জাতিক নেতারা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার এই উদ্যোগকে অনুকরণীয় হিসেবে অভিহিত করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ভাবনী চিন্তার ফসল এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নিরাপদ প্রসব সম্পন্ন হচ্ছে, গ্রাম পর্যায়ের এই ক্লিনিকগুলোর স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করছে।