আওয়ামী লীগের আয়-ব্যয় কমেছে
নির্বাচন কমিশনে গত বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলটির আয় হয়েছে প্রায় নয় কোটি টাকা। ব্যয় বাদ দিয়ে উদ্বৃত্ত আছে সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি টাকা।
আওয়ামী লীগের এই আয়-ব্যয় ও উদ্বৃত্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি হলেও দলীয় হিসাবে ২০১৩ সালের চেয়ে অনেক কম আয়-ব্যয় করেছে তারা।
আজ সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন (নিক) সচিব মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের কাছে ২০১৪ সালের বার্ষিক আয় ব্যয়ের হিসাব জমা দেয় আওয়ামী লীগের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল।
পরে দলটির দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের জানান, গত বছর আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে নয় কোটি পাঁচ লাখ ৪৫ হাজার ৬৫৩ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে, তিন কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ৮২১ টাকা।
অর্থাৎ এক বছরেই দলটির তহবিলে উদ্বৃত্ত আছে পাঁচ কোটি ৬১ লাখ চার হাজার ৮৩২ টাকা।
আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে আয়-ব্যয়ের পূর্ণ তথ্য গণমাধ্যমের কাছে জানানো যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন আবদুস সোবহান গোলাপ।
২০১৩ সালে আওয়ামী লীগের আয় ছিল প্রায় ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং ব্যয় ছিল প্রায় ছয় কোটি ৭০ লাখ টাকা। উদ্বৃত্ত ছিল প্রায় পাঁচ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
আগের বছরের তুলনায় ২০১৪ সালে আয়-ব্যয়ের পরিমাণ কম হওয়ার কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বলেন, ‘দলের আয় বরাবরের মতোই রয়েছে। তবে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আওয়ামী লীগ আনুষ্ঠানিকভাবে অনেক কর্মসূচি করতে পারেনি। নাশকতার সময় অন্তত ৯২ দিন আমাদের প্রচারণা-অনুষ্ঠান না থাকায় ব্যয়ও কম হয়েছে।’
তবে বিএনপি-জামায়াতের নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্তদের দলের পক্ষ থেকে মানবিক ও আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন গোলাপ।
আয়ের উৎস ও ব্যয়ের খাত সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আমাদের এ আয় হয়েছে প্রাথমিক সদস্যদের চাঁদা, সংসদ সদস্যদের চাঁদা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের চাঁদা এবং বিভিন্ন প্রকাশনা বিক্রি থেকে। আর ব্যয় হয়েছে সভা-সেমিনার আয়োজন, সারা দেশের দলীয় কার্যালয়গুলোর পরিষেবা, বিল, অফিসের কর্মচারীদের বেতন এবং অঙ্গসংগঠনের পেছনে খরচসহ বিভিন্ন খাতে।’
তিন সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী উপকমিটির সদস্য রিয়াজুল কবীর কাওসার ও সুপ্রিম কোর্ট আওয়ামী আইনজীবী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুদ্দিন খালেদ।
এর আগে গত ২৪ আগস্ট নির্বাচন কমিশনে ২০১৪ সালের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয় বিএনপি। ওই বছর দলটির মোট আয় হয়েছে দুই কোটি ৮৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৪ টাকা। ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ৫৩ লাখ তিন হাজার ৫৯০ টাকা, অর্থাৎ ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৬ টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩১ জুলাই। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সময় চেয়ে আবেদন করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে সময় দেয় নির্বাচন কমিশন।