প্রতিশ্রুতি রক্ষায় নির্বাচন দিন : খালেদা জিয়া
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের কাছ থেকে ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়া মৌলিক-মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন এখন জরুরি। জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মৃতপ্রায় গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করতে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পথ প্রশস্ত করবেন।’urgentPhoto
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মী-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা জানান।
বাণীতে দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিএনপি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের যে রাজনীতি তিনি সূচনা করেছিলেন- তা বাকশালী একদলীয় রাজনীতিউত্তর সমাজ ও রাষ্ট্রে জনগণের কাছে সমাদৃত হয়েছে বলে এ দেশের জনগণ বারবার এ দলকে রাষ্ট্র ও সরকার পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছে।’
‘এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে’ বিএনপির ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিকূলতা এবং রাজনৈতিক বৈরী পরিবেশেও দেশের গণতন্ত্র যতবার বিপন্ন হয়েছে বা গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত এসেছে- বিএনপি সবসময় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরশাসন-গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির চ্যালেঞ্জকে দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করেছে এবং গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছে।’
জনগণের সেবায় বিএনপি আগামী দিনগুলোতেও বলিষ্ঠ ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া।
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আজ দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে। ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনের পর গণতন্ত্র এখন মৃতপ্রায়। দেশবিরোধী নানা চুক্তি ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছে।’
‘দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠেছে। দেশজুড়ে গণহত্যা, গুম, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের মহোৎসব চলছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ভূলুণ্ঠিত করার জন্য নির্লজ্জ দলীয়করণের চূড়ান্ত রূপ দিতে বিচারকদের অভিশংসনের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ন্যস্ত করার আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বে নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী করার জন্যই এই আইন পাস করা হয়েছে। এটি পাস হওয়ার ফলে নিপীড়িত মানুষের আইনি প্রতিকার পাওয়ার শেষ ভরসাটুকুও বন্ধ হয়ে গেছে। জনপ্রশাসন আজ্ঞাবহ হওয়ার কারণেই স্থবির হয়ে পড়েছে। যাতে জনমতের প্রতিফলন না ঘটে সেজন্য গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে জাতীয় সম্প্রচার নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এটি মূলত এই অবৈধ সরকার কর্তৃক মানুষের বাক, ব্যক্তি ও চিন্তার স্বাধীনতাকেই অপহরণ করা’- বলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।