নড়িয়ায় লঞ্চঘাট ধসে পাঁচ ব্যক্তি নিখোঁজ
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় নদী ভাঙন চলছে। মঙ্গলবার দুপুরে নড়িয়ার সাধুর বাজার লঞ্চঘাটের ৫০ মিটার জায়গা ধসে পাঁচ ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। ওই লঞ্চঘাটের আটটি দোকান বিলীন হয়ে গেছে। এ সময় স্থানীয়রা নদী থেকে ১২ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। কিন্তু এখনো পাঁচজন নিখোঁজ আছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
নড়িয়া উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, দুই মাস ধরে নড়িয়া উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা ভাঙছে। মোক্তারেরচর, কেদারপুর, ঘরিসার ও নড়িয়া পৌরসভার ১০টি গ্রামে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। দুই মাসের ভাঙনে চার শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে কেদারপুর ইউনিয়নের সাধুরবাজার লঞ্চঘাটে ৩০ মিটার জায়গা নদীতে ধসে পড়ে। তখন আটটি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন সেখানে একটি দোকান থেকে মাহিন্দ্র গাড়িতে সিমেন্ট তুলছিলেন ১৫ জন শ্রমিক। ওই মাহিন্দ্র গাড়ি নিয়ে শ্রমিকরা নদীতে নিমজ্জিত হয়ে যায়। এ ছাড়া দোকান ও লঞ্চঘাটে আরো কয়েকজন মানুষ ছিল। তারাও নদীতে তলিয়ে যায়।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে ১২ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। তাদের নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত ইমাম হোসেন কোটোয়ারি ও আব্দুল হাই বকস ছৈয়ালকে গুরুতর আহ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন হলেন চাকধ গ্রামের নাসির উদ্দিন হাওলাদার, পাচু খাঁর কান্দি গ্রামের মোশারফ চোকদার, কেদারপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন, আইটেল মোবাইল ফোন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী আল আমীন হাসান।
প্রত্যক্ষদর্শী নান্নু ব্যাপারী বলেন, লঞ্চঘাটে কাজ করতে ছিলাম। হঠাৎ মাটি ধসে নদীতে তলিয়ে যাই। এরপর আর কিছু মনে নেই। আমি কীভাবে হাসপাতালে এলাম জানি না।
কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন দেওয়ান বলেন, লঞ্চঘাটের জায়গা ধসে মানুষ নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ছুটে যাই। ট্রলারে করে ১২ জন মানুষকে উদ্ধার করেছি। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। মাটি ধসের সময় একটি মাহিন্দ্র গাড়ি তলিয়ে যায়। এ সময় লঞ্চের টার্মিনাল ডুবে যায়। ১০ মিনিট পরে পন্টুনটি ভেসে ওঠে। ঘাটে থাকা দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা ইয়াছমিন বলেন, ভাঙনে মাটি ধসের ঘটনায় পাঁচ ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। তাদের সন্ধানের জন্য ফায়ার সার্ভিসের শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরের পাঁচটি দল কাজ করছে। নদীর তীরবর্তী মানুষের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপজলা ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জাকিরের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন।