এক শিশু ঘরের আড়ায়, আরেকজন ঝুলল গাবগাছে!

একই পথে হাঁটল দুই শিশু। একজন ঘরের আড়ায়, আরেকজন বাড়ির পাশে গাবগাছে ঝুলে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে বলে জানা গেছে। তারা হলো শিল্পী রানী সরকার (১২) ও সুজয় মন্ডল (১৩)। এ ঘটনায় সাতক্ষীরার দুই পরিবারে শোকের মাতম চলছে।
শিল্পী রানী সরকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঘোনা ইউনিয়নের মহাদেবনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। আর সুজয় মণ্ডল একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ করত। মহাদেবনগর গ্রামের একটি পুকুরের এপার-ওপারে বসবাস পরিবার দুটির।
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে ঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গণেশ সরকার জানান, সবজি বিক্রেতা বিষ্ণুপদ সরকারের দুই ছেলেমেয়ে। ছেলে মিঠুন দশম শ্রেণির ছাত্র। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পড়ালেখা নিয়ে দুই ভাইবোনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এতেই অভিমানী হয়ে ওঠে শিল্পী। কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে সে তার পড়ার ঘরের বাতি নিভিয়ে দেয়। এরপর ঘরের আড়ায় নিজের ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। বাড়ির লোকজন দ্রুত ছুটে এসে তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য গণেশ সরকার আরো জানান, গ্রামে এ খবর ছড়িয় পড়তেই প্রতিবেশী কিশোর সুজয় মণ্ডল বাড়ির পাশে শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে বসে তার এক বন্ধুর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নেয়। ফোন করে সে নিশ্চিত হয় শিল্পী মারা গেছে। তখন সে বলে, ‘তাহলে আমিও গেলাম’। শিল্পীদের বাড়িতে গিয়ে লাশ দেখে বাড়ি না ফিরে সে বাড়ির পাশের একটি গাব গাছে রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে। রাতভর তার কোনো খোঁজ না পেয়ে আজ শনিবার সকালে তাকে ঝুলতে দেখা যায় গাবগাছে। পুলিশের অনুমতি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান তার লাশ মাটিতে নামান। সুজয় একই গ্রামের দিনমজুর গণেশ মণ্ডলের ছেলে।
ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান জানান, শিল্পীকে তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমাহিত করা হয়েছে। কিশোর সুজয়ের সৎকার হয়েছে গ্রামের শ্মশানে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় দুটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।