বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি, ভারতীয় কর্মী ধরা
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা চুরি করে ধরা পড়েছেন স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার এক কর্মচারী। গত রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটে। চুরির ঘটনায় স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী দীপক চন্দ্র দাশকে আটক করা হয়। তবে তাঁকে পুলিশে না দিয়ে ভারতের ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়ের জেনারেল ম্যানেজার এ এফ এম আসাদুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু বিষয়টি আসলে তা নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্ট অত্যন্ত সুরক্ষিত একটি স্থান। সেখান থেকে এভাবে টাকা চুরি করা সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘রোববার সকালে ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা নিতে আসেন বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তারা ভল্ট থেকে টাকা বের করে বাইরের বারান্দা বা করিডরে তা গুছিয়ে নিচ্ছিলেন। এখানে টাকা গুছিয়ে তারপর নিজ নিজ পরিবহনে বা নিজস্ব ব্যবস্থায় টাকা নিজেদের ব্যাংকে নিয়ে যায় ব্যাংকগুলো। এ সময় সেখানে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ারও টাকা বের করে গোছানো হচ্ছিল। এর একপর্যায়ে স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার কর্মচারী দীপক চন্দ্র দাশ এক বান্ডিল টাকা নিয়ে চুপচাপ বের হয়ে যান।’
আসাদুজ্জামান জানান, পরে ওই টাকা তিনি ব্যাংকের বাইরে অপেক্ষমান নতুন টাকা বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে যান। সে সময় টাকার বান্ডেল দেখে তা চিনতে পেরে সন্দেহ হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের সদস্যদের। পরে তাঁরা দীপক চন্দ্র দাশকে শনাক্ত করে আটক করেন। পরে সিসিটিভি ফুটেজ মিলিয়ে দেখা যায় যে তিনি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের টাকার বান্ডেল থেকে এক বান্ডেল টাকা চুরি করেছেন।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে দীপক টাকা চুরির কথা স্বীকার করেন। এরপর যেহেতু তিনি স্টেট ব্যাংকের কর্মচারী তাই তাঁর ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে ডেকে তাদের হাতে দীপককে তুলে দেওয়া হয় বলে জানান আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, এরই মধ্যে দীপককে বরখাস্ত করেছে স্টেট ব্যাংক। আগামীকাল বুধবার ওই কর্মচারীকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে।
এদিকে বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। আজ তিনি ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানান আসাদুজ্জামান। বাংলাদেশ ব্যাংকের এত নিরাপত্তার ভেতরে এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটল সে সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন গভর্নর। এ ঘটনায় ব্যাংকের কারো গাফিলতি প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আগামীকাল ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ দেখে চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারির গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান আসাদুজ্জামান। এ ছাড়া ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো শাখায় এই রকম ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গভর্নর নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।