তালতলীতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা
বরগুনার তালতলী উপজেলায় বিএনপির সভায় যোগ দিতে যাওয়া নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে বিএনপির এক নেতার বাসভবন ও একটি চায়ের দোকান। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বিএনপির এক নেতার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে।
গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। তালতলী উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ২৫-৩০ জনের একটি দল ওই হামলা চালায় বলে বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
তালতলী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আল মামুন জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তালতলী নূরজাহান বালিকা বিদ্যালয়ে বিএনপির জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটির যৌথ উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ওই মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের ওপর তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ২৫-৩০ জনের একটি দল হামলা চালায়।
ওই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বরগুনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর শাহীন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে এ হামলায় বায়েজিদ (২২), কাওসার (২৩) ও মাসুদ (৩৫) নামের তিন বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হন।
হুমায়ুন কবীর শাহীন আরো বলেন, এ সময় বিএনপির তালতলী উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আল মামুনের বাসভবনসহ স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হুমায়ুনের চায়ের দোকানে হামলা-ভাঙচুর করে তারা। পরে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন আক্কাস মৃধার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও তারা তালা ঝুলিয়ে দেয় বলে তিনি জানান।
তালতলী বিএনপির আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন আক্কাস মৃধা জানান, মতবিনিময় সভা পণ্ড করতে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মিন্টুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপি কর্মীদের মারধর করে ও বাসা বাড়িতে হামলা চালায়।
তালতলী উপজেলার চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, বিএনপির কমিটি নিয়ে আক্কাস গ্রুপ ও শহীদ গ্রুপ মতবিনিময় সভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তিনি দাবি করেন, তাঁর নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মারধর করার ঘটনা মিথ্যা ও বানোয়াট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন বলে জানান।
তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবিউল কবির জমাদ্দার বলেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সময় ওই সভাস্থলের পাশ দিয়ে নবী হোসেন (৩০) ও সিদ্দিকুর রহমান (২৯) নামের দুজন কর্মী ওখান থেকে আসার সময় বিএনপির কর্মীরা তাঁদের পিটিয়ে জখম করে। এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ রাতেই তা নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে তালতলী বিএনপির আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন আক্কাস মৃধা বলেন, তাঁদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং নেই। তাঁরা ঐক্যবদ্ধভাবে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছিলেন। লোকসমাগম দেখে মিন্টু ও তাঁর লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আকতার বলেন, ‘তালতলী বন্দরে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আল মামুনের বাসভবনের কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বন্দরে কোনো মারধরের ঘটনা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ কোনো পক্ষ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’