গভীর রাতে বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/12/27/photo-1545910922.jpg)
দিনাজপুরের বিরল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আ ন ম বজলুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগও দিয়েছে তারা।
গতকাল বুধবার গভীর রাতে বিরলের নিজ বাড়ি থেকে বজলুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে আদালত থেকে জেলখানায় নেওয়া হলে এলাকাবাসী ও বিএনপি নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে বিক্ষোভ করে। পরে তারা দিনাজপুর-২ আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরীর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে যায় এবং সেখানেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় তাদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহামুদুল আলমের কাছে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আ ন ম বজলুর রশিদকে বুধবার দিবাগত রাতে তাঁর বাড়ি থেকে বিরল থানা পুলিশ বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের নানা রকমের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমে অভিযোগত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবরও পাঠানো হয়।
দিনাজপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী এ গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই, কোনো নির্দিষ্ট মামলা ছাড়াই, তাঁর (বজলুর রশিদ) বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই ওনাকে গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করার জন্য, কী কারণ জানার জন্য আমার বাসায় আসে। আমি তাঁদের নিয়ে এখানে। বলেছি যে, আমি একটু জেলা রিটার্নিং অফিসার সাহেবের সঙ্গে একটু কথা বলি।’
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দিনাজপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী সাদিক রিয়াজ চৌধুরী। ছবি : এনটিভি
‘আমি এ ব্যাপারে একটা অভিযোগ দিয়েছি যে, কী কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হলো? আমাকে জেলা প্রশাসক সাহেব বললেন যে, “আমি জিনিসটা ইনকোয়ারি করে দেখি”। কী কারণে। উনিও নাকি জানেন না, আমার কাছে নাকি শুনলেন এবং বললেন যে, “আমি এটা কোয়ারি করে দেখি। এটা কী কারণ সেটা আমি আপনাদের জানাবো”’, বলেন সাদিক রিয়াজ।
বিএনপি নেতা আরো বলেন, ‘মনে করছি এটা (বজলুরকে গ্রেপ্তার) সম্পূর্ণ আমাদের ধানের শীষের যে জোয়ার উঠেছে এখন সারা বাংলাদেশে, অর্থাৎ আমার বিরল, বোচাগঞ্জ এই আসনে যে জোয়ার সেটাকে বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পরিকল্পিতভাবে এটি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে সাদিক রিয়াজ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও গতকাল বলেছেন, (সবাইকে) সহনীয় পর্যায়ে থাকার জন্য। এ রকম একটা বিবৃতি আমরা দেখেছি। ‘(অথচ) আমাদের নেতাকর্মীদের, আমাদের সাধারণ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর জন্য এবং যেন তারা মাঠে না থাকে, সেই জন্যই এই কাজটা করা হচ্ছে বলে আমি মনে করছি। সবচেয়ে যেটা দুঃখজনক যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন বাসায়, যাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই, যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, সেই সমস্ত লোকদের বাসায় যাচ্ছে, বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে তাঁদের না পেয়ে এমনও কথা বলেছেন যেটা শুনেছি যে, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগ না করলে তাঁদের ক্রসফায়ার দেওয়া হবে” এবং মহিলাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে, একটা ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করছে। যেটা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বলে আমরা মনে করছি’, বলেন সাদিক রিয়াজ চৌধুরী।
এদিকে বিরল উপজেলা চেয়ারম্যান বজলুর রশিদকে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে মুঠোফোনে এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল।