‘ভিআইপি’ পৌরসভায় গর্তে ভরা সড়ক

রাষ্ট্রের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত কিশোরগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দারা। তাই এটিকে বলা হয় ভিআইপি পৌরসভা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। খানাখন্দে ভরা বেহাল সড়কগুলো দেখে কেউ বলবে না ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এটি একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা।
urgentPhoto
সংস্কারের অভাবে প্রধান প্রধান সড়কসহ অলি-গলির ভাঙা পথের কারণে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরসভার নাগরিকরা।
দু-একটি সড়কের কথা বাদ দিলে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সর্বত্র এখন ভালো সড়ক খুঁজে পাওয়াই কঠিন। খোদ পৌর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, পৌর এলাকার ৭৭ কিলোমিটার পাকা সড়কের ৬০ ভাগই বর্তমানে চলাচলের অনুপযুক্ত। তবে পৌরসভার বাসিন্দারা মনে করছেন, তা আরো বেশি। ৮০ ভাগের বেশি সড়কই বর্তমানে চলাচলের উপযোগী নয়।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না আসায় অর্থের অভাবে কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের সংস্কারকাজ বন্ধ আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার একাধিক সূত্র জানায়, পৌরসভার মেয়র সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সুনজরে না থাকায় এক বছর ধরে সরকারি অনুদান বন্ধ আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন জটিল শারীরিক সমস্যায় পৌর মেয়র মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া কাঞ্চন প্রায়ই চিকিৎসাধীন থাকেন। বেশির ভাগ সময়ই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার ফলেও পৌরসভার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়া ও টানা দুই বর্ষা মৌসুমের প্রভাবে নষ্ট হয়ে গেছে জেলা শহরের বেশির ভাগ সড়ক। এসব সড়কে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব সড়কে পানি জমে থাকছে দিনের পর দিন। পানি ও কাদায় একাকার হয়ে পড়া এসব সড়কে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়তই যানবাহন উল্টে এবং নষ্ট হয়ে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এমনকি জরাজীর্ণ এসব সড়ক দিয়ে পথচারীদেরও পোহাতে হচ্ছে অসহনীয় ভোগান্তি। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, নারী ও হাসপাতালগামী রোগীদের বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।কিশোরগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. ইসমাইল হোসেন ইদু স্বীকার করেছেন রাস্তাঘাটের অবস্থা বেশ খারাপ এবং তা চলাচলের অনুপযোগী। তিনি জানান, ইউজিপ-৩ নামক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা সংস্কারের জন্য এরই মধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানেও ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কারের কাজ অচিরেই শুরু হবে। কাজ শেষ হওয়ার পর জনদুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্যানেল মেয়র।