শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘দেশের উন্নয়নে এবং বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে আমাদের শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা বিশ্বমানের নির্মাতা হিসেবে বিশ্বদরবারে নিজেদের আসন করে নিতে পারে।’
আজ মঙ্গলবার আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের খেলার মাঠে কেন্দ্রীয়ভাবে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
নতুন বছরের প্রথম দিন আনুষ্ঠানিকভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়েছে।
এ বছর বিভিন্ন স্তরের চার কোটি ২৬ লাখ ১৯ হাজার ৮৬৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮২ কপি বই পৌঁছে দেওয়ার এ আয়োজন করেছে সরকার।
রাজধানীর ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হাতে ২০১৯ সালের নতুন পাঠ্যবই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী। নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
তারা লাল-সবুজ ক্যাপ, প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন, লাল-নীল রঙিন ফিতা নেড়ে এবং বেলুন উড়িয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে। নতুন বই উঁচু করে নাড়তে থাকে। তখন সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে এমনভাবে গড়ে তুলতে চাই, যাতে তারা দক্ষ, যোগ্য ও তথ্য এবং প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারে।’ ওদের গড়ে তুলতে শিক্ষক, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতিও আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।
২০১৮ সাল থেকে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সাদরী—এই পাঁচ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের বই বিতরণ করা হচ্ছে। এবার ৯৮ হাজার ১৪৪ শিক্ষার্থীর জন্য বিতরণ করা হচ্ছে দুই লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৪ কপি বই। ৭৫০ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর জন্য বিতরণ করা হচ্ছে পাঁচ হাজার ৮৫৭ কপি বই।
২০১০ থেকে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের সর্বমোট ২৯৬ কোটি সাত লাখ ৮৯ হাজার ১৭২ কপি পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের জন্য বিতরণ করা হয়। বছরের প্রথম দিনে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি, দাখিল, দাখিল ভোকেশনাল, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষায় পাঠ্যপুস্তক ও এসএসসি ভোকেশনাল স্তরের (কারিগরি ও ব্রেইল বইসহ) শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বই পৌঁছে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারিভাবে এত বই ছাপিয়ে বাঁধাই করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীর হাতে বছরের প্রথম দিনে বিতরণের ইতিহাস বিশ্বের কোথাও নেই ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিসিবি, পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও প্রকাশনা সমিতি নেতৃবৃন্দ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।