মুসলিম উম্মাহর ঐক্যে গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ‘এই উম্মাহর একসঙ্গে থাকা উচিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতে ওই দেশগুলোর জনগণকেই ভোগান্তির শিকার হতে হয়।’ এজন্য মুসলিম উম্মাহর মধ্যে কোন সমস্যা দেখা দিলে তা আলাপ- আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাওফর আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে দুইদেশের মধ্যে অভিন্ন সাংস্কৃতিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে- ‘সবারর সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।’
ইরানের জনগণকে সাহসী হিসেবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইরানের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হচ্ছে।’
বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অসাধারণ দিকসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনগণের জীবন-মানের উন্নয়নে তাঁর সরকার কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দারিদ্র্যের হার ২১ শতাংশে নামিয়ে এনেছি এবং আমাদের উন্নয়ন নীতিমালা হচ্ছে গ্রামকেন্দ্রিক।’
বাংলাদেশে বিরাজমান ধর্মীয় সম্প্রীতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে সব ধর্মের মানুষ একত্রে যেকোন ধর্মীয় উৎসবে অংশগ্রহণ করে।’
তিনি বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে ইরানের রাষ্ট্রপতির প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালীন তাঁর সরকারের পক্ষে থেকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতা প্রদানে রাষ্ট্রদূতকে আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী ২০১২ সালে ষষ্ঠ ন্যাম সম্মেলন এবং ১৯৯৭ সালে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁর ইরান সফরের কথা স্মরণ করেন।
ইরানের রাষ্ট্রদূত বৈঠকে ৩০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে তাঁর দলের বিপুল বিজয়ে ইরানের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
রেজা নাওফর শেখ হাসিনাকে একজন বিচক্ষণ ও দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘আমরা ইরানের সব মানুষ আপনাকে ভালোবাসি।’ তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুষম উন্নয়ন নীতিমালার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান।
বাংলাদেশ ও ইরানের মধ্যে বিদ্যমান ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের উল্লেখ করে রেজা নাওফর বলেন, ‘আমাদের এই সম্পর্ককে আমাদের আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভাল সহযোগিতা রয়েছে। রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কও সুন্দর অবস্থানে রয়েছে।’ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘এটি বর্তমানে সন্তোষজনক অবস্থায় নেই।’
‘পশ্চিমা অবরোধ সত্ত্বেও ইরান এগিয়ে যাচ্ছে’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে কাজ করে যাচ্ছি, কেননা আমরা কোনো যুদ্ধবাজ দেশ নই।’
‘এই অঞ্চলের উত্তেজনা প্রশমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেকোন উদ্যোগকে ইরান স্বাগত জানাবে,’ বলে জানান ইরানের রাষ্ট্রদূত।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।