রাজধানীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গৃহবধূর মৃত্যু
রাজধানীতে আগুনে দগ্ধ হয়ে রুমা নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
urgentPhoto
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার রাতে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় রুমাকে ঢামেকে নেওয়া হয়। তাঁর শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
রুমার বোন ফাতেমা জানান, রুমার স্বামী আবু তাহেরের আরেক স্ত্রী আছে। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে তাহের বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাসায় থাকেন। আর রুমা তাঁদের সঙ্গে দক্ষিণ বাড্ডায় থাকতেন। ঘটনার দিন রুমার স্বামী তাঁকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যান। পরে পেট্রল ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর কাইয়ুম বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে আমি ওই এলাকায় টহল ডিউটিতে ছিলাম। রাত ৯টার দিকে আমার ডিউটি শেষ পর্যায়ে, তখন একজন বলল ওই এলাকায় একটি বাসায় এক নারী শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। পরে আমি গিয়ে ওই বাড়ির অন্য ফ্ল্যাটের নারী সদস্যদের সহায়তায় তাকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এসআই ওমর আরো জানান, ‘রুমা যাকে স্বামী দাবি করছেন, বসুন্ধরায় তার বাড়িতে গেলে তিনি দরজা খোলেননি। এ সময় রুমা খুব চিৎকার চেঁচামেচি করেন। এক সময় নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন রুমা। এরপর অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর (রুমা) কাছে কেরসিন- দিয়াশলাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে সেগুলো তিনি সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেন।’
এদিকে এ বিষয়ে ভাটারা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের সদস্যদের।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে ভাটারা থানার এসআই ওমর জানান, মৃতের পরিবারের কোনো লোকজনই মামলা করতে থানায় যায়নি। উপরন্তু সুরতহাল বিশ্লেষণের জন্য রুমার পরিবারের কোনো সদস্য সাহায্য করেনি। তিনি বলেন, ‘মামলা না নিয়ে আমাদের কোনো লাভ নেই। তাদের পক্ষ থেকে থানায় কেউ আসেনি। এ ছাড়া গতকাল রুমার মৃত্যুর পর হাসপাতালে সুরতহাল করতে গেলে পরিবারের সদস্যরা তা করতে বাধা দেয়।’
পাঁচ বছর আগে রুমার সঙ্গে বিয়ে হয় আবু তাহেরের। আবু তাহেরের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন রুমা। বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও রুমার সঙ্গে বসবাস করছিলেন তাহের। কিন্তু কয়েকদিন আগে হজ পালন শেষে দেশে ফিরে শুধু প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস শুরু করেন তাহের। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরেই এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।