যথাযোগ্য মর্যাদায় সারা দেশে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদায় বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে সারা দেশে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর শহীদ স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থানে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত অনুষ্ঠিত হয়।
ঢাকার বাইরে থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
আরিচ আহমেদ শাহ, চট্টগ্রাম : সকাল ৬টা ১ মিনিটে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিউগল সুর বাজানোর পর শুরু হয় শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।
শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে স্বাধীনতার বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, ডা. আফছারুল আমীন এমপি, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল মান্নান, পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) গোলাম ফারুক, পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান, জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান।
এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আজ সকাল থেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
আতিকুর রহমান সোহাগ, বগুড়া : দিবসটির প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সূচনা করা হয়।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শহরের ফুলবাড়ী বিজয়স্তম্ভে জেলা প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক মো. ফয়েজ আহাম্মদ, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ ছাড়াও সকাল ৮টার দিকে দেশব্যাপী একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বগুড়ার সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন।
পরে শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সালাম গ্রহণ, শিশু-কিশোর সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। সালাম গ্রহণ করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক মো. ফয়েজ আহাম্মদ ও পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা।
নাফিজ আশরাফ, নারায়ণগঞ্জ : বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সমাবেশ করে জেলা বিএনপি।
পরে জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয়স্তম্ভে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা।
অন্যদিকে মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের নেতৃত্বে আরেকটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি নারায়ণগঞ্জ ক্লাব থেকে শুরু হয়ে বঙ্গবন্ধু সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে বিজয়স্তম্ভে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মহানগর বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
এ ছাড়াও বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষক দল ও শ্রমিক দল।
আইয়ুব আলী, ময়মনসিংহ : দিবসের প্রথম প্রহরে পাটগুদাম মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ চত্বরে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সূচনা করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহামেদসহ সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
সকালে সার্কিট হাউজ মাঠে বেলুন উড়িয়ে কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। পুলিশ ও আনসারসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শন করে। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আলোকসজ্জা, রক্তদান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
হালিম খান, নাটোর : সকালে নাটোরের সিংড়া কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পরে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় নিরবতা পালন করা হয়।
এ ছাড়া নাটোরের শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। সেখানে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক শাহরিয়াজ ও পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন।
সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী, কুষ্টিয়া : সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির সূচনা করা হয়। পরে কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরের কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন ও পুলিশ সুপার এসএম তানভির আরাফাত।
এরপর কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবী সংগঠন স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি : ভোরে চেঙ্গী স্কয়ার সংলগ্ন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শরণার্থী পুনর্বাসন বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সরকারি দপ্তর ও খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।
সকাল ৮টায় খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করছে।
দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, বিকেলে প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট, আলোচনা সভা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা : সকাল ১০টায় পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যোগে পাঁচ সহস্রাধিক ব্যবসায়ীর অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মো. সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আলী মতুর্জা বিশ্বাস সনি ও সহসভাপতি মো. ফোরকান রেজা বাদশা বিশ্বাসের নেতৃত্বে র্যালিটি শহরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ব্যবসায়ীরা।
পাবনা চেম্বারের পরিচালক ও পাবনা মোটর মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, পাবনা চেম্বারের পরিচালক সাংবাদিক এবিএম ফজলুর রহমান, জাহিদ হোসেন জামিম, মো. মাসুদুর রহমান মিন্টু, উত্তম কুমার কুন্ডু, এএইচএম রেজাউন জুয়েল, মিরাজুল আলম রুবেল, আবুল হোসাইন খান রিপনসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে পাবনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর বক্তব্য দেন পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হাবিব, অ্যাডভোকেট সাইফুল আলম বাবলু ও চন্দন কুমার চক্রবর্তী, পাবনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কাজী আতিয়ুর রহমান, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক শিবজিত নাগ এবং পাবনা সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি আব্দুল মতীন খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নুল আবেদীন। এ অনুষ্ঠানে শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
শাহজাহান সিরাজ মিঠু, জয়পুরহাট : ভোর ৬টায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। ৬টা ১০ মিনিটে শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানের স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
পরে জেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একে একে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। সকাল ৮টায় জয়পুরহাট স্টেডিয়ামে পুলিশ, স্কাউট, গার্লস গাইড, কাবস স্কাউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শরীফুল ইসলাম ইন্না, সিরাজগঞ্জ : ৩১ বার তোপধ্বধির মধ্যে দিয়ে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। এরপর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সিরাজগঞ্জ সদর (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাংসদ অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা, পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা বিএনপি, জেলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিরাজগঞ্জ পৌরসভা, সিরাজগঞ্জ প্রেসক্লাব, সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সকাল ৮টায় শহীদ শামসুদ্দিন স্টেডিয়ামে শুরু হয় শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজ। এ ছাড়া দিনব্যাপী সরকারি-বেসরকারিভাবে নেওয়া হয় নানা কর্মসূচি।
এ ছাড়া জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, চৌহালী, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, কামারখন্দ ও কাজিপুরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালিত হয়।
দিবসটি উপলক্ষে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারী মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
শহীদুল হুদা অলক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সকালে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। পরে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকালে ডা. মেসবাহুল হক স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক এজেডএম নূরুল হক ও পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নাসির আহমেদ, গাজীপুর : সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। পরে শহীদদের স্মরণে শহরের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান গাজীপুরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
সকালে শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের অংশগ্রহণে স্বাধীনতা দিবস কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
বিশ্বজিৎ সাহা, নরসিংদী : দিবসটি উপলক্ষে শহরের মুসলেহ উদ্দিন ভূইয়া স্টেডিয়ামে কুচকাওয়াজ, আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ডিসপ্লে প্রদর্শন করা হয়। সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠান পালিত হয়।
এ সময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পুলিশ ও আনসারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি পালন করে।
ভজন দাস, নেত্রকোনা : দিবসটি উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এ সময় স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রাশাসক মঈনউল ইসলাম ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জয়দেব চৌধুরী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
এ ছাড়াও জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে সাতপাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন।
সকাল ৮টায় জেলা শহরের সাতপাই আধুনিক স্টেডিয়াম মাঠে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ও পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কুচকাওয়াজের উদ্বোধন করেন। এতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে কুচকাওয়াজ ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করে।
মো. জালাল উদ্দিন, কুমিল্লা : সকালে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে মহান স্বাধীনতা দিবসের সূচনা হয়। সকাল ৬টায় কুমিল্লার টাউন হল মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সদরের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার, আঞ্জুম সুলতানা সীমা এমপি, জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীরের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা পুলিশ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ভিক্টোরিয়া কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও সামাজিক সংগঠন।
সকাল ৮টায় কুমিল্লা স্টেডিয়ামে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, ক্যাডেট ও রোভার স্কাউটের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সালাম গ্রহণ করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় রামঘাটে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কাকন রেজা, শেরপুর : সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শেরপুর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হয়। মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেরপুর সদর আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। এরপর জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব, পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী আশরাফুল আজীম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
সকালে শেরপুর পৌরপার্কে অনুষ্ঠিত হয় কুচকাওয়াজ। দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শফিক জামান, জামালপুর : দিবসটি উপলক্ষে মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘর আয়োজন করেছিল ব্যতিক্রমী অদম্য পদযাত্রার। আজ ভোরে জামালপুর পিটিআই বধ্যভূমি থেকে পর্বতারোহী সাদিয়া চৌধুরীর সঙ্গে এই পদযাত্রায় যুক্ত হয় জামালপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। ২৬ কিলোমিটার পদযাত্রায় জেলার বিভিন্ন বধ্যভূমিতে নিরবে দাঁড়িয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় তরুণ প্রজন্ম। পদযাত্রায় উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, ভালোবাসি জামালপুর, প্রথম আলো বন্ধুসভার কর্মীরা ছাড়াও জামালপুর মুক্তিসংগ্রাম জাদুঘরের পরিচালক উৎপল কান্তি ধর, ট্রাস্টি হিল্লোল সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ, সহসভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ছানা, গণসংগীত শিল্পী কয়েস উদ্দিন প্রমুখ অংশ নেন।
রেজ আন উল বাসার তাপস, মেহেরপুর : শহীদ শামসুজ্জোহা পার্কে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। পরে শহরের কলেজ মোড়ে অবস্থিত শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। প্রথমে জেলা প্রশাসনের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক আতাউল গনি। পরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান।
এরপর একে একে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সেখানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এ ছাড়াও দিনটি উপলক্ষে সকাল ৮টায় স্টেডিয়াম মাঠে শিশু-কিশোর সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মোস্তাফিজ আমিন, ভৈরব : দিবসটি উপলক্ষে ৬টা ১ মিনিটে ৩১ বার তোপধ্বনি ও শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মধ্য দিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য দুর্জয় ভৈরবের পাদদেশে ভৈরববাসীর পক্ষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অঙ্গসংগঠন, সাংবাদিক, পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ সময় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে সকাল ৭টার দিকে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত বধ্যভূমিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠন। এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত।
সকাল ৮টায় ভৈরব শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে সারা দেশের সঙ্গে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গিয়াস উদ্দিন, ইউএনও ইসরাত সাদমীন ও পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমান।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নবনির্বাচিত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সায়হুল্লাহ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম বাকী বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক আতিক আহমেদ সৌরভসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, সরকারি বিভিন্ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কুচকাওয়াজে পুলিশ, আনসার, বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিশু-কিশোর সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন। পরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিশু-কিশোর সংগঠনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় প্রযোগিতামূলক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শরীরচর্চা প্রদর্শনী। বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী উপস্থিত হয়ে এসব অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
আহমেদ সাব্বির সোহেল, মানিকগঞ্জ : স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আজ দুপুরে মানিকগঞ্জ পুলিশ লাইন্স গ্রাউন্ডে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা পুলিশ।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপন, জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেল, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদেব কুমার সাহা, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সহসভাপতি আহমেদ সাব্বির সোহেল, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাসসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিনসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য এ সময় রক্তদান করেন।
এরপর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের সম্মাননা দেওয়া হয়।
মন্ত্রী জাহিদ মালেক মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের এবং তাঁদের অবর্তমানে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
এরপর পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভার। সেখানে মন্ত্রী জাহিদ মালেক ছাড়াও বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট গোলাম মহীউদ্দীন, মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র গাজী কামরুল হুদা সেলিম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন লুডু, মানিকগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ফটো, সম্মাননা পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুর বাতেন, মানিকগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
আলমগীর হোসেন, ভালুকা : দিবসটি উপলক্ষে ভালুকা সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে জাতীয় সংগীত ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলার ২৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে এবং বিভিন্ন ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
ওছমান হারুন মাহমুদ, ফেনী : আজ দিনভর বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। ২৫ মার্চ কালরাতে পিলখানায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেনী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে রাত ১২ টা ০১ মিনিটে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়েছে জেলা পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।
ভোরে ফেনী জেল রোডের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি, ডায়াবেটিক সমিতি, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সকাল ৮টায় ভাষা শহীদ সালাম স্টেডিয়ামে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিএনসিসি, স্কাউট, গার্লস গাইড ও শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সালাম গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান। দুপুরে বিভিন্ন মসজিদে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মন্দিরে প্রার্থনা করা হয়।
কে এম সবুজ, ঝালকাঠি : সকালে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। পরে পুলিশ সুপার জুবায়দুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
সকাল ৮টায় স্থানীয় শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক ও পুলিশ সুপার জুবায়দুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশ, আনসার ভিডিপি, বিএনসিসি, বয়স্কাউট, গার্লস গাইডসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াচ, শরীরচর্চা ও ডিসপ্লে প্রদর্শন করে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনাসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন খেলাধুলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শাহজাহান সিরাজ মিঠু, জয়পুরহাট : দিবসটি উপলক্ষে জয়পুরহাটের পাঁচটি উপজেলায় পৃথকভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের ফুলেল সংবর্ধনা ও উপহার দেওয়া হয়েছে।
এ উপলক্ষে আজ দুপুরে জয়পুরহাট পৌরসভার সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জয়পুরহাটের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে সদর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, আপ্যায়ন ও উপহার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাকির হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি পুলিশ সুপার মো. রশীদুল হাসান, পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আমজাদ হোসেন প্রমুখ।
মাহমুদ রানা, ইবি সংবাদদাতা : দিবসটি উপলক্ষে সকাল ৮টায় প্রশাসন ভবনের সামনে পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী জাতীয় পতাকা ও উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে পর্যায়ক্রমে আবাসিক হলগুলোতে পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি শুরু হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ স্মৃতিসৌধে গিয়ে শেষ হয়।
স্মৃতিসৌধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী ও উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান। পরে পর্যায়ক্রমে শিক্ষক সমিতি, শাপলা ফোরাম, জিয়া পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মকর্তা সমিতি, বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম ড. আ স ম শোয়াইব আহমদ। অনুষ্ঠানটি তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করেন ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস, ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস ২০১৯ উদযাপন উপকমিটির আহ্বায়ক ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান।
এর আগে ২৫ মার্চ রাতে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় কেন্দ্রীয় মসজিদে কুরআনখানি ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সঞ্জিব দাস, ফরিদপুর : সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হয়। সকাল পৌনে ৭টায় শহরের গোয়ালচামটে শহীদ স্মৃতিফলকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপির পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক ও আওয়ামী লীগের নেতারা।
পরে শহীদ স্মৃতিফলকে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়া, পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লোকমান হোসেন মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, পৌর মেয়র মাহতাব আলী মেথু, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রভাংশু সোম মহান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম প্রমুখ।
এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, জেলা বিএনপি, শহর আওয়ামী লীগ, থানা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ সরকারি-বেসরকারি সংগঠনগুলো ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
পরে স্মৃতিফলক থেকে একটি স্বাধীনতা র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেখ জামাল স্টেডিয়ামে অবস্থিত গণকবরে গিয়ে শেষ হয়। গণকবরে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এর আগে শহীদ স্মৃতিফলকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় কবি জসিম উদদীন হলে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক বেগম উম্মে সালমা তানজিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লোকমান হোসেন মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা কবির আলম মাও প্রমুখ। পরে ৩৯৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের হাতে প্রধান অতিথি প্রাইজবন্ড তুলে দেন।
মিজানুর রহমান, ঝিনাইদহ : সকালে স্থানীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করা হয়। জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিভিল সার্জন, জেলা পরিষদ, জেলা প্রেসক্লাব, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সর্বস্তরের মানুষ স্থানীয় শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করেন।
এছাড়াও ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়। এটি সকাল সাড়ে ৭ টায় শহরের থানা সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কালীগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হাসানসহ সহযোগী সব অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিবুর রহমান হাসিব, কুড়িগ্রাম : সকাল ৬টার দিকে স্বাধীনতার স্তম্ভ ও শহীদ স্মৃতি ফলকে শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পনের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা করা হয়। পরে সকাল ৮টায় কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠে পতাকা উত্তোলন ও দেশব্যাপী একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। পরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান শারীরিক কসরত ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। দিনব্যাপী খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়।
এ ছাড়াও মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দুপুর ১২টায় সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার জীবিত মুক্তি মুক্তিযোদ্ধাদের দুই হাতের ছাপযুক্ত ডকুমেন্টারি ‘বীরগাথা’ প্রকাশ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন। জেলার ৯ উপজেলায় আলাদা আলাদাভাবে সব জীবিত মুক্তিযোদ্ধার দুই হাতের ছাপ সংবলিত বীরগাথা নামে এই স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হয়।