বাদমাগরিব টেলিসামাদের জানাজা, কাল যাচ্ছে এফডিসিতে

বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা টেলিসামাদের প্রথম জানাজা আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে। পরে আগামীকাল রোববার তাঁকে মুন্সীগঞ্জে পারিবারিকভাবে দাফন করা হবে।
আজ শনিবার দুপুর দেড়টায় রাজধানীর বেসরকারি স্কয়ার হাসপাতালে গুণী এই অভিনেতার জীবনাবসান হয়।
তারপর টেলিসামাদের ভাগ্নে ফাহিম আহমেদ এনটিভি অনলাইন বলেন, ‘রাজধানীর ফার্মগেটের পশ্চিম রাজাবাজার জামে মসজিদে বাদমাগরিব টেলিসামাদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পারিবারিকভাবে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এরপর আজ রাতে টেলিসামাদের মরদেহ বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকাতেই রাখা হবে। কাল রোববার বেলা ১১টায় তাঁর লাশ দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে এই শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা। পরে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা হবে।
জানাজা শেষে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের নয়াগাঁও গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে টেলিসামাদের লাশ। সেখানে বাদজোহর তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান ফাহিম আহমেদ।
প্রায় এক বছর ধরেই শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে হাসপাতাল-বাসায় আসা-যাওয়া করছিলেন টেলিসামাদ। এর মধ্যে শরীরে অস্ত্রোপচারও করা হয়। সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে হঠাৎ করেই আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন টেলিসামাদ। তারপরই তাঁকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। গতকাল শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর তাঁকে আইসিওতে রাখা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মারা গেলেন তিনি।
সত্তরের দশকের শুরুতে রুপালি পর্দায় পা রাখা টেলিসামাদ ছয় শতাধিক বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন টেলিসামাদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি। ছবি আঁকার নেশার পাশাপাশি অভিনয়ের নেশাও ছিল তাঁর।
১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় তাঁর। সাড়ে চার দশক ধরে ঢালিউডে কাজ করছেন তিনি। অনিমেষ আইচ পরিচালিত ২০১৫ সালে টেলিসামাদের সর্বশেষ ছবি ‘জিরো ডিগ্রি’ মুক্তি পায়।
টেলিসামাদের অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো- ‘রিকসাওয়ালার ছেলে’, ‘কুমারী মা’, ‘অশিক্ষিত’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘মাটির ঘর’, ‘মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি’, ‘কাজের মানুষ’ ইত্যাদি। এরমধ্যে ‘নয়নমণি’ ও ‘পায়ে চলার পথ’ ছবিতে অভিনয়ের কারণে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।
পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, খাদ্যনালির সমস্যা, রক্তে প্লাটিনাম কমে যাওয়া, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন টেলিসামাদ। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর হার্টে বাইপাস সার্জারি করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ২০ অক্টোবর তাঁর বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতেও জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়।