প্রত্যাশা পূরণ হলে ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যায় : ইসি সচিব
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, সরকারের কাছে প্রত্যাশা পূরণ হলে, ভোট দেওয়ার প্রবণতা কমে যায়। কারণ, তখন আর সরকার পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে না।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে রাজশাহী অঞ্চলের ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসি সচিব এ কথা বলেন।
ইসি সচিব বলেন, পৃথিবীজুড়ে মানুষের ভোট দেওয়ার প্রবণতা ক্রমেই কমে আসছে। এর অন্যতম কারণ হলো- কোনো সরকারের কাছে মানুষের যে প্রত্যাশা থাকে, সেটি যদি পূরণ হয়, তখন স্বাভাবিকভাবে মানুষের ভোট দেওয়ার আগ্রহ কমে যায়। প্রত্যাশা পূরণ না হলে সরকার পরিবর্তনের জন্য মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ বাড়ে।
উদাহরণ টেনে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, বেলজিয়ামে ২৫ ভাগ মানুষ ভোট দেয়। আমেরিকার স্থানীয় ভোটে ৩৬ ভাগ ভোট পড়ে। ফ্রান্সে সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণে শতকরা ৫০ ভাগের কম ভোট হওয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দুই দফায় হয়।
ইসি সচিব বলেন, নির্বাচন না হলে গণতন্ত্র মজবুত রাখা যাবে না, অব্যাহত রাখা যাবে না। আর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন জরুরি। আমাদের কাজ হচ্ছে একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা। আপনারাও ভোটার হন। ভোটার হলেই যে ভোট দিতে হবে, এমন নয়। পছন্দ না হলে ভোট দিবেন না। কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে বিবেচিত হবে।
বর্তমানে সব কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সচিব বলেন, পাসপোর্ট থেকে শুরু করে চাকরি, বিভিন্ন ভাতার আবেদনসহ সব ক্ষেত্রে এখন জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক। জাতীয় তথ্য ভাণ্ডারে ১০ কোটি ৪২ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ আছে। আমাদের এবারের টার্গেট ৮০ লাখ নতুন ভোটার। নতুন ভোটারদের সংযুক্ত ও যারা মৃত্যু বরণ করেছেন তাদের নাম কর্তন করা। এটাই হলো ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজে নিয়োজিতদের দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন সচিব কয়েকজন নতুন ভোটারের হাতে হালনাগাদ তথ্য ফরম তুলে দেন।
রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর-রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মহা. হবিবুর রহমান, মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ, জেলা প্রশাসক এস এম আব্দুল কাদের, পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ বক্তব্য দেন।
রাজশাহী আঞ্চালিক নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় নতুন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ১৩ মে পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। এরপর আটটি উপজেলায় এবং রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ১৬ উপজেলায় তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হবে। চারটি ধাপে এই কার্যক্রম সম্পন্ন হবে আগামী ২০ নভেম্বর।