এবার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ নার্সদের
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স দিলারা খাতুনের মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকদের দায়ী করে অন্য নার্সরা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভাঙচুর চালিয়েছেন। রোববার সন্ধ্যায় এ ঘটনার পর হাসপাতাল বক্স পুলিশের সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরে বিক্ষুব্ধ নার্সদের নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বৈঠক করে তাদের শান্ত করেন।
দিলারা খাতুন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নওডাঙ্গা গ্রামের সবুজ আহমেদ মিঠুনের স্ত্রী। সবুজের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে শনিবার দুপুরের আগেই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছে রোববার সন্ধ্যায়।
আর দিলারার সহকর্মী নার্সদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাঁদের এক সহকর্মীকে হারাতে হলো।
সবুজ আহমেদ জানান, সন্তান প্রসবের জন্য গত বৃহস্পতিবার তাঁর স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দ্বিতীয় দফায় অপারেশনের পর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তখন তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন দিনে তাঁর শরীরে ১৬ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছিল, দিলারা খাতুন জন্ডিসে আক্রান্ত। এ ছাড়া তাঁর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। দূষিত হয়েছে রক্তও। তিন দিনে চিকিৎসায় তাঁরা প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করেন।
সবুজ আহমেদের অভিযোগ, শনিবার থেকে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কোনো স্বজনকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। রোববার সন্ধ্যায় দিলারার মৃত্যুর কথা জানানো হয়।
সবুজের দাবি, দিলারার মরদেহ থেকে পানি বের হচ্ছে। এ থেকে তারা ধারণা করছেন, শনিবারই দিলারার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা গোপন রেখেছিল।
এদিকে দিলারা খাতুনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববার সন্ধ্যায় দিলারার সহকর্মী নার্সরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা আইসিইউয়ের দরজার কাঁচ ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন নার্সরা। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে নার্সরা কাজে ফেরেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে কয়েক দফা ফোন করা হলেও আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল ফোন ধরেননি।
পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিলুর রহমান বলেছেন, বিষয়টি তদন্তের আগে তিনি এ ঘটনার বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চান না।