বিনামূল্যে মিলবে ৫০ রোগের পূর্ণ চিকিৎসা
রোগ নির্ণয়, ওষুধ, পথ্যসহ ৫০টি রোগের পূর্ণ চিকিৎসা পাওয়া যাবে বিনামূল্যে। এ জন্য থাকতে হবে একটি স্বাস্থ্য কার্ড। তবে সবাই ওই কার্ড পাবেন না। দরিদ্র ব্যক্তিদের ওই স্বাস্থ্য কার্ড দেবে সরকার।
এজন্য টাঙ্গাইলের তিন উপজেলায় দরিদ্রদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচির পাইলট প্রকল্প চালু করছে সরকার। স্বাস্থ্য অর্থায়ন কার্যক্রমের আওতায় কালিহাতী, মধুপুর ও ঘাটাইলে দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণের জন্য এই প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে। পরে তা সারা দেশে বিস্তৃত করা হবে।
রোববার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে স্বাস্থ্য অর্থায়ন পাইলট সংক্রান্ত স্টিয়ারিং কমিটির সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা পরীক্ষিৎ চৌধুরীর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার নানাবিধ কর্মসূচি নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। দরিদ্র মানুষের কাছে মানসম্মত সেবা পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সদিচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাতে স্বাস্থ্য অর্থায়ন কর্মসূচিকে সফল করতে হবে। তিনি বলেন, এই কর্মসূচির টেকসই বাস্তবায়ন করতে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
সভায় জানানো হয়, এই কর্মসূচির অধীনে নির্দিষ্ট সূচক ব্যবহার করে পাইলট এলাকায় দরিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এসব পরিবারকে একটি স্বাস্থ্য কার্ড দেওয়া হবে। এই কার্ডের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন এবং রোগ নির্ণয়, ওষুধ, পথ্যসহ ৫০টি রোগের পূর্ণ চিকিৎসা বিনামূল্যে পাবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের জন্য পরিবারপ্রতি বার্ষিক এক হাজার টাকা প্রিমিয়াম হিসেবে সরকার দেবে এবং প্রত্যেক পরিবার বার্ষিক সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সুবিধা লাভ করবে। পাইলট প্রকল্প চলাকালে এই প্রিমিয়ামের অর্থসহ প্রকল্পের যাবতীয় ব্যয় স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টরের উন্নয়ন কর্মসূচি থেকে সংস্থান করা হবে। পরে সরকারি বরাদ্দ ও স্বচ্ছল পরিবারের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহের মাধ্যমে কর্মসূচিটির অর্থায়ন করা হবে।
পাইলটের প্রাথমিক পর্যায়ে এই সেবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং প্রয়োজনে জেলা হাসপাতাল থেকে দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতে বেসরকারি হাসপাতালকে এই কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
সভায় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নুরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. নূর হোসেন তালুকদার, স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের মহাপরিচালক মো. আসাদুল ইসলামসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।