‘সত্যের সন্ধানে’ বাড়িছাড়া সেই স্কুলছাত্র পুলিশের হাতে
‘সত্যের সন্ধানে’ বাড়িছাড়া সাতক্ষীরার স্কুলছাত্র মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিনকে আটক করেছে পুলিশ। সে এখন চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা পুলিশের হেফাজতে আছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন এশার নামাজ পড়ার কথা বলে সাতক্ষীরা শহরের মনজিতপুরের ভাড়া বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। মোমিন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র। তাঁর ক্রমিক নম্বর ১। তাদের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে। এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়।
আজ রোববার সকালে মোমিনের বাবা সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইপিজেড থানার পুলিশ গতকাল শনিবার গভীর রাতে জানিয়েছে, মোমিন তাদের হেফাজতে আছে। পরে আমরা স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাকে আনার জন্য এরই মধ্যে আমার বড় ছেলে চট্টগ্রাম গেছে। পুলিশের একটি দলও যাবে। সেখানে আমি থাকব।’
তবে কোথা থেকে কীভাবে মোমিনকে পুলিশ উদ্ধার করেছে, তা জানাতে পারেননি কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি জানান, মোমিন ভালো আছে, সুস্থ আছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ সকালে বলেন, ‘মোমিনকে চট্টগ্রামে উদ্ধার করা হয়েছে। সে এখন থানায় আছে। এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’
শুক্রবার রাতে মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন চিঠি লিখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। চিঠিতে সে লেখে, ‘আমি গৃহ পলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে।’
নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে সে আরো লিখেছে, ‘দীর্ঘকালে আমাকে কেহ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভুর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি।’
মোহায়মিনুলের বড় ভাই আবদুল আহাদ জানান, সে অত্যন্ত চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। তার কোনো বন্ধুও নেই। দু-একটি ছেলের সঙ্গে সে স্কুলে যেত। সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সব সময় আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবত। কথা বলত ও কবিতা লিখত।