আশুগঞ্জ থেকে সার সরবরাহ বন্ধ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/09/19/photo-1568912989.jpg)
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে দ্বিতীয় দফায় দুই দিন ধরে ছয় জেলায় সার সরবরাহ বন্ধ রেখেছে উপজেলায় কর্মরত ট্রাক শ্রমিকরা। প্রশাসন থেকে কয়েক দফা এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও বিষয়টি নিয়ে সুরাহা হচ্ছে না। ফলে মৌসুমের শুরুতেই সময় মতো সার না পাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট জেলার চাষাবাদে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
সরকারিভাবে প্রতি ট্রাকে ১৩ টন সার পরিবহন করার নিয়ম থাকলেও আশুগঞ্জ থেকে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া ট্রাকগুলোকে ১৫ থেকে ২০ টন সার নিতে বাধ্য করেন সার ব্যবসায়ীরা। এতে সড়কে পুলিশকে মানিয়ে চলাচল করতে হয় ট্রাকশ্রমিকদের। তাই বাধ্য হয়ে আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে সার নেওয়া বন্ধ রেখেছেন ট্রাকচালক ও শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের দাবি, সরকার নির্ধারিত সারের বেশি তারা বহন করবেন না। তাই সার লোড দিচ্ছেন না সার ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হলে প্রথম দফায় গত শনিবার ও রোববার সার পরিবহন বন্ধ থাকে। পরে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজিমুল হায়দারের উদ্যোগে কয়েকবার আলোচনায় বসলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে গতকাল বুধবার থেকে পুনরায় সার সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
ট্রাকশ্রমিক ও চালক মো. মাহালম মিয়া জানান, সরকারিভাবে ট্রাকে করে ১৩ টনের বেশি সার পরিবহন না করার জন্য বলা হলেও সার ব্যবসায়ীরা জোর করে বেশি সার পরিবহনের জন্য চাপ দেন। এতে বিভিন্ন স্থানে সার সরবরাহের সময় ট্রাকশ্রমিকদের আর্থিক জরিমানাসহ ওভারলোডের মামলায় পড়তে হয়। যার কারণে শ্রমিকরা সরকার নির্ধারিত সারের বেশি বহন করতে রাজি হচ্ছেন না।
এই ঘটনায় আশুগঞ্জ ট্রাকশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. ইদন মিয়া মিন্টু জানান, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমরা একমত। তবে সার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হচ্ছে। আশা করা যায় বিষয়টি অচিরেই সুরাহা হবে।
অন্যদিকে আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে ফেরিঘাট প্রায় দুই কিলোমিটার হলেও আগে থেকে এখানে নির্ধারিত ভাড়া ছিল এক হাজার ৯০০ টাকা। এই জায়গায়ও ট্রাকশ্রমিকরা ১৩ টন সারের বেশি নিতে রাজি হচ্ছেন না। এই কারণে সার ব্যবসায়ীরা লোকাল ট্রাকের সিরিয়াল বাদ দিয়ে নিজেদের ট্রাক ব্যবহার করে সার পরিবহন করতে চান।
জেলা সার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জালাল মিয়া জানান, বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে সবার কথা হয়েছে। সেই মোতাবেক আমরা সার পরিবহনের জন্য অনুরোধ করেছি। বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হলে আবারও বসে সমাধান করা হবে।
এই বিষয়ে ইউএনও মো. নাজিমুল হায়দার জানান, সার কারখানার আশেপাশে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট থাকতে পারবে না। পাশাপাশি কেউ সার সরবরাহে কোনো বিঘ্ন ঘটাতে পারবে না। বিষয়গুলো নিয়ে সার ব্যবসায়ী ও ট্রাকশ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।