ভোলায় পুলিশের মামলায় অজ্ঞাত ৫ হাজার আসামি
ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের দফায় দফায় সংঘর্ষে চারজন নিহতের ঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক আজ সোমবার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘হত্যা এবং পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যকাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে পুলিশ এই মামলাটি করেছে। মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।’
এদিকে আজ সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), কোস্টগার্ড ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। ভোলা জেলা সদরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ১৮ অক্টোবর ভোলার বোরহানউদ্দিনে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি হ্যাক করে মেসেঞ্জারে ধর্মীয় অবমাননাকর বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর বিষয়টি তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ বিপ্লব চন্দ্রকে তাঁদের হেফাজতে আটক করে রাখে। বিপ্লবের আইডিটি হ্যাক করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে আটক করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার সকালে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিরা বিপ্লবের ফাঁসির দাবিতে ঈদগাহ মাদ্রাসার মাঠে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। পুলিশ এই সমাবেশের অনুমতি দেয়নি এবং জনতাকে অনুরোধ করে সমাবেশ না করার জন্য। তারপর হাজারো জনতা সেখানে জড়ো হয়। এবং সেখানে উত্তেজিত মুসল্লিরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। আক্রমণকারীদের গুলিতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন।
পুলিশ আরো জানায়, একপর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে ও সরকারি জানমাল রক্ষার্থে ও উত্তেজিত লোকজনকে নিবৃত্ত করতে প্রথমে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে এবং পরে শটগান চালায় পুলিশ। পরে পরিস্থিতির ভয়াবহতায় ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে একপর্যায়ে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এ সময় চারজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান পাটওয়ারী (৪৫), বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর ছেলে মাহবুব পাটওয়ারী (১৪), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান (৪০) ও বোরহানউদ্দিনের মো. শাহিন।
এর মধ্যে মাহফুজুর রহমান পাটওয়ারীর জানাজা গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় বোরহানউদ্দিন উত্তরমাথা বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদের জানাজা নিজ নিজ গ্রামে হয়। পরে তাঁদের দাফন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।