সরকারি চাকরিতে নারীর অবস্থান বেড়েছে ৩০ শতাংশ

গত পাঁচ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীর অবস্থান বেড়েছে ৩০ শতাংশ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা বাসস।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক হিসাবে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সরকারি চাকরিতে নারীর সংখ্যা দ্রুতহারে বেড়েছে। সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও ২০০৯ সালে মোট দুই লাখ ২৩ হাজার ৬৪৪ নারী কর্মরত ছিলেন। এ সংখ্যা ২০১৪-তে বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৮০৪ জন। এ হিসাবে দেখা যায়, মাত্র পাঁচ বছরেই সরকারি চাকরিতে ৬৫ হাজার ১৪০ জন নারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এ বৃদ্ধির হার ২৯ দশমিক ১ শতাংশ।
সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে সম্পূর্ণ পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও কেবল সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ২০০৯ সালের তুলনায় বর্তমানে এ হার বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
সূত্র জানায়, আগের তুলনায় আগামী বছরগুলোতে সরকারি কর্মক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা ও হার আরো দ্রুতগতিতে বাড়বে। গত পাঁচ বছরের হিসাবে সে ধারাই লক্ষ্য করা যায়। সরকারি চাকরিতে নারীর সংখ্যা ২০০৯-এর তুলনায় ২০১০ সালে মাত্র তিন হাজার ৪৭০ জন বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার ১১৪ জন। কিন্তু পরের বছরই তা ২৩ হাজারের বেশি বা ১০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে দুই লাখ ৫০ হাজার ১১৯ জন।
বেসরকারি ক্ষেত্রে নারীর কর্মসংস্থানের হালনাগাদ তথ্য নেই। তবে ২০১৩ সালে বেসরকারি সংস্থা ‘উন্নয়ন অন্বেষণ’-এর এক গবেষণাপত্রে দেখা যায়, ২০০০ থেকে ২০১০ সালে শ্রমজীবী নারীর সংখ্যা ৮৬ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৭২ লাখ। এ বৃদ্ধি হয়েছে মূলত নারীর শিক্ষার হার বাড়ার পাশাপাশি পোশাকশিল্প ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অধিক হারে নতুন নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার কারণে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাংলাদেশসহ সদস্য দেশগুলোকে ভবিষ্যতে অধিক হারে নারীর কাজের সুযোগ তৈরির জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আইএলও ওই পরামর্শ দিয়ে বলেছে, কর্মসূচিতে নারীর বেতন বৈষম্য এবং নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রাধান্য দিতে হবে।
রিপোর্টে বলা হয়, এখনো একজন নারী একই কাজ করেও পুরুষের তুলনায় ২৩ শতাংশ কম বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। অন্যদিকে ৭৭ শতাংশ পুরুষ কাজ করছে, যেখানে নারীকর্মীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ।
কর্মক্ষেত্রে নারী এখনো সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা বিশ্বে শতকরা ৩৫ জন নারী শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ায় সব সময় কাজ করতে পারছেন না। অথচ তাঁদেরই চাকরির পাশাপাশি পারিবারিক কাজে প্রতি সপ্তাহে ২৬ ঘণ্টা সময় দিতে হচ্ছে।