বেতাগীতে গভীর রাতে বিএনপি প্রার্থীর বাড়িতে তাণ্ডব
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/12/27/photo-1451221266.jpg)
বরগুনার বেতাগী পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে গতকাল শনিবার রাতে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীর পক্ষে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন হুমায়ুন কবির।
urgentPhoto
হুমায়ুন কবির জানান, শনিবার রাত ১২টার দিকে তিনি তাঁর বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ বি এম গোলাম কবীরের পক্ষের শতাধিক নেতা-কর্মী লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ে এবং অতর্কিতে হামলা চালায়। এ সময় বাড়ির আসবাবপত্র ভাঙচুর করে তারা টাকা ও স্বর্ণালংকারও লুট করে নেয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী হামলা ও লুটপাট শেষে ফিরে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, একটি মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে বেতাগী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছানোর আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে পাল্টা অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম গোলাম কবির জানান, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের লোকজন তাঁর একটি নির্বাচনী কার্যালয়সহ এক ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙচুর করে। এ ঘটনার জের ধরে তাঁর কয়েকজন কর্মী হুমায়ুন কবিরের বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর কর্মীদের নিবৃত্ত করে সঙ্গে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, হামলার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাধার মুখেও শেষ মুহূর্তের প্রচার
এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের বাধার মুখেও শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত এখন বরগুনার তিনটি পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা। ব্যস্ত তাঁদের কর্মী-সমর্থকরাও। পাড়ায় পাড়ায় উঠান বৈঠক, নির্বাচনী গান ও পথসভা করে চলছে নির্বাচনী প্রচার।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের হামলা ও মামলার কারণে নির্বাচনী প্রচার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বরগুনার তিনটি পৌরসভার একাধিক আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীসহ বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা।
বরগুনা পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেন জানান, প্রচার-প্রচারণার শুরুর দিকে গত ১৪ ডিসেম্বর তাঁর শান্তিপূর্ণ একটি পথসভায় হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুসহ অর্ধশতাধিক কর্মী-সমর্থককে আহত করেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল আহসান মহারাজের কর্মী-সমর্থকরা। অথচ ওই ঘটনায় মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাঁর ছেলে ও জামাতাসহ ১১৪ জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে দ্রুতবিচার আইনে মামলা করা হয়েছে। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে তাঁর প্রচার ও প্রচারণা।
বরগুনার বেতাগীতে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. হুমায়ুন কবির ও পাথরঘাটার বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মল্লিক মো. আইউব জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর প্রভাবশালী দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হুমকি ও দাপটে তাঁরা এক রকম অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তাঁদের প্রচার ও প্রচারণা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের কর্মী সমর্থকদের ওপরও একাধিকবার হামলা চালানো হয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে বরগুনা, পাথরঘাটা ও বেতাগী পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত তিন প্রার্থী যথাক্রমে অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ, আনোয়ার হোসেন আকন ও এ বি এম হুমায়ুন কবীর সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।
কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, তাঁর তিনটি অফিসসহ বঙ্গবন্ধুর ছবি ও নৌকা প্রতীক ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁর কয়েকজন কর্মীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেনের কর্মীরা। তিনি আরো বলেন, নিজেদের দোষ ঢাকতে এসব অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি মনোনীত ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।