বিশ্ব কিডনি দিবস আজ
হঠাৎ কিডনি অকেজো হওয়ার পরিণতিকে হার্ট অ্যাটাকের ভয়াবহতার সঙ্গে তুলনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বাংলাদেশে প্রতিবছর মারা যাচ্ছেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে প্রায় দুই কোটি লোক কিডনি রোগে আক্রান্ত। এমন বাস্তবতা সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবস।
কিডনি বিকল রোধে সচেতনতা বাড়াতে ২০০৬ সাল থেকে বিশ্বের ১১২টি দেশের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশেও পালন করা হয় বিশ্ব কিডনি দিবস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগীর কিডনি সম্পূর্ণভাবে বিকল হয়ে যায়। অন্য রোগের চেয়ে কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয় বেশি। তাই শুধু চিকিৎসার অভাবে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কিডনি রোগী মারা যান। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, উন্নত বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসা ব্যয় কম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) শিশু বিভাগের চেয়ারম্যান মাইন উদ্দিন বলেন, উন্নত বিশ্বে একজন কিডনি রোগীকে প্রাথমিক অবস্থায় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশে মাত্র তিন থেকে চার লাখ টাকায় এ চিকিৎসা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাশের দেশ ভারতেও প্রতিটি কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। আর দেশে খরচ কিছুটা কম হলেও অন্য চিকিৎসার তুলনায় বেশি। শিশুদের কিডনি প্রতিস্থাপন জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় খরচের অঙ্কটা আরো বেড়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ৪৮৩টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে শিশু ছিল মাত্র ছয়জন। গত সপ্তাহে আদিবাসী শিশু মং-এর শরীরে তার বাবার দেওয়া কিডনি প্রতিস্থাপন করে স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে কাজ করেছে বিএসএমএমইউর একদল চিকিৎসক। এ জন্য মং-এর পরিবারের খরচ হয়েছে মাত্র আড়াই লাখ টাকা।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে প্রতি পাঁচজনের একজন কিডনি সমস্যায় ভোগেন। আর গত ৪০ বছরে দেশে কিডনি আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর হার বেড়েছে।
কিডনি সমস্যার জন্য ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার ও ভেজাল খাবারকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা। কিডনি রোগ প্রতিহতে করণীয় প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রণজিৎ রায় বলেন, জ্বর বা ডায়রিয়ায় বেশি করে পানি খেতে হবে। প্রস্রাবের কোনো সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসা করতে হবে। কোনোভাবে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিতে হবে।
গবেষকরা বলেন, ভেজাল খাবারের কারণে বাংলাদেশে বড়দের তুলনায় শিশুরা বেশি কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে।