রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর বেতন বৃদ্ধির প্রতিবেদন চূড়ান্ত

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার-ডেপুটি স্পিকার্স, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির চারটি বিল দশম জাতীয় সংসদের ‘আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি সংসদে পেশ করার জন্য চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রদান করেছে। তবে সংসদ সদস্যদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির বিলটি এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম জাতীয় সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ২৪তম বৈঠকে বিলগুলোর ওপর আলোচনা শেষে কমিটি তা সংসদে পেশের জন্য সুপারিশ করে। এতে কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত সভাপতিত্ব করেন।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতির (বেতন ও সুবিধাদি) (সংশোধনী) বিল, ২০১৬, প্রধানমন্ত্রীর (ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধনী) বিল, ২০১৬, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের (ভাতা ও সুবিধাদি) বিল, ২০১৬, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর (ভাতা ও সুবিধাদি) (সংশোধনী) বিল, ২০১৬ ও সংসদ সদস্যদের (বেতন ও ভাতাদি) (সংশোধনী) বিল, ২০১৬-এর ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের নিয়ে বিলটি ছাড়া বাকি চারটি বিল পর্যালোচনা শেষে সংসদে পেশ করার জন্য প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে কমিটি।
দশম জাতীয় সংসদের চলমান ৯ম অধিবেশনে বিলগুলো সংসদের বৈঠকে উত্থাপিত হলে তা সংসদীয় কমিটিতে অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যদের বেতন ৯৬ শতাংশ এবং ভাতা প্রায় তিনগুণ বাড়িয়ে আইন সংশোধনের প্রস্তাব উত্থাপতি হয়েছে জাতীয় সংসদে। সংশোধিত প্রস্তাব অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির বেতন ৬১ হাজার ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রীর বেতন ৫৮ হাজার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে মন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী ও সমপর্যায়ের উপদেষ্টাদের বেতন ৪৭ হাজার ৮০০ থেকে বাড়িয়ে ৯২ হাজার টাকা এবং উপমন্ত্রীর বেতন ৪৫ হাজার ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে স্পিকারের মাসিক বেতন ৫৭ হাজার ২০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ ১২ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। স্পিকারের দৈনিক ভাতা এক হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে তিন হাজার টাকা, মাসিক ব্যয় নিয়ামক ভাতা আট হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ১৩ হাজার টাকা, স্বেচ্ছাসেবী তহবিল ১০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১১ লাখ টাকা এবং বিমানযোগে ভ্রমণকালে বিমা কাভারেজ ১০ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৬ লাখ টাকা করার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
একই সঙ্গে বিলে ডেপুটি স্পিকারের মাসিক বেতন ৫৩ হাজার ১০০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। দৈনিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে দুই হাজার টাকা, মাসিক ব্যয় নিয়ামক ভাতা ৬ হাজার টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকা, স্বেচ্ছাসেবী তহবিল আট লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১০ লাখ টাকা এবং বিমানযোগে ভ্রমণকালে বিমা কাভারেজ পাঁচ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে আট লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য মো. শামসুল হক টুকু, অ্যাডভোকেট মো. জিয়াউল হক মৃধা ও সফুরা বেগম বৈঠকে অংশ নেন। এ ছাড়া বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সংসদ সদস্য মইন উদ্দিন খান বাদল ও কামরুন নাহার জলি। এ ছাড়া আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবরা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবসহ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।