ক্লাস শুরুর দাবি রাঙামাটি মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের

একই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে অন্য সহপাঠীরা ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিলেও পাহাড়ের রাজনৈতিক জটিলতা ও দ্বন্দ্বের কারণে এখনো শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা কার্যক্রম অবিলম্বে শুরু করার দাবি জানিয়েছেন ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা। ক্লাস শুরু না হলে তাঁরা দেড় বছরের সেশনজটে পড়বেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ সময় অনেক অভিভাবকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মেডিকেল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। এ ছাড়া বক্তব্য দেন মেডিকেল শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকী, নাজমুন নাহার ও শাহরিন সুলতানা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ জানুয়ারি সারা দেশে একযোগে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজসহ নতুন ১১টি মেডিকেল কলেজ উদ্বোধন করেন। পাহাড়ি রাজনৈতিক জটিলতায় এখনো ক্লাস শুরু করতে পারেনি কলেজটি। কিন্তু অন্য ১০টি মেডিকেল কলেজ এগিয়ে গেছে। ফলে রাঙামাটি কলেজে ভর্তি হওয়া ৫১ জন শিক্ষার্থীর সেশনজট বাড়ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাঁদের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন। তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।’
শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকী বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর শুরুতেই সংকটে পড়েছি। অন্য মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় শেষ করে কার্ড পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। আর আমরা এখনো ক্লাস শুরু করতে পারিনি। পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক রাজনীতির কারণে আমরা ৫১ জন শিক্ষার্থী হতাশ এবং আমাদের অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।’
সংকট দূর করে মেডিকেল কলেজ চালু কিংবা চট্টগ্রামের অন্য কোনো ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষের ক্লাস চালু করার দাবি জানান শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সংবাদ সম্মেলন শেষে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১০ জানুয়ারি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের পাঠদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। কিন্তু বিষয়টির বিরোধিতা করেন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। এদিন জেএসএসের ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলায় অবরোধের ডাক দেয়। পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগের পক্ষে নামে ছাত্রলীগ। উভয় পক্ষের উত্তেজনার একপর্যায়ে রাঙামাটি শহরে কারফিউ এবং ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
জেএসএস নেতাদের দাবি, পার্বত্য শান্তিচুক্তির শর্ত অনুযায়ী পাহাড়ে যে কোনো উন্নয়নকাজ ও আইন প্রণয়নের আগে পার্বত্য আঞ্চলিক পরিষদের মতামত নিতে বাধ্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। পাশাপাশি পার্বত্য এলাকায় উচ্চশিক্ষার পরিবেশ তৈরি না করে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান নির্মাণকে পাহাড়ে বাঙালি পুনর্বাসনের নয়া উদ্যোগ বলে মনে করেন পাহাড়ি নেতারা।
এ দ্বন্দ্বের কারণেই নির্ধারিত সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ।