‘সুখ সাগরে’ সুখ মেলেনি

মেহেরপুরে ‘সুখ সাগর’ পেঁয়াজ চাষ করে সুখ মেলেনি চাষির। জেলায় এ বছর উচ্চ ফলনশীল এ পেঁয়াজ চাষে আশানুরূপ ফলন পাননি কৃষক। অন্যদিকে ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে এ মসলা আসায় উৎপাদিত ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
অধিক লাভের আশায় মেহেরপুরে ‘সুখ সাগর’ জাতের পেঁয়াজ চাষ শুরু করেন চাষিরা। সঠিক পরিচর্যা করার পরও প্রত্যাশামতো ফলন না আসায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁদের কপালে। স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর যে জমিতে বিঘাপ্রতি ১৬০-২০০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছিল, সেই একই জমিতে এবার সর্বোচ্চ ১০০ মণ ফলনও পাচ্ছেন না চাষিরা। আর ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণে (এলসি) পেঁয়াজ আসায় এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের।
কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এবার জেলায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মুজিবনগর উপজেলায় উচ্চ ফলনশীল ‘সুখ সাগর’ জাতের পেঁয়াজের চাষ হয়েছে এক হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে।
মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের চাষি গফুর মিয়া বলেন, ‘গত বছর চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছিলাম। এ বছর লাভের আশায় আট বিঘা জমিতে আবাদ করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছে আর জমিতে যেগুলো আছে, তাতে চার লাখ টাকা হবে কি না সন্দেহ।’
একই গ্রামের কৃষক উবায়দুর রহমান জানান, তিনি তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। এতে বীজ, সার, সেচসহ খরচ হয়েছে এক লাখ ২০ হাজার টাকা। জমিতে যে পরিমাণ পেঁয়াজ হয়েছে তার মূল্য সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা হবে।
একই উপজেলার মোনাখালী গ্রামের করিম মণ্ডল বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার ফলন হয়েছে অনেক কম। তারপরও ভারত থেকে যদি দেড়-দুই মাস পেঁয়াজ আসা বন্ধ থাকে, তাহলে দামটা একটু বেশি পাওয়া যাবে। না হলে বিঘাপ্রতি আমাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে লোকসান হবে।’
তবে কৃষকদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেন মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক কৃষি কর্মকর্তা এস এম মোস্তাফিজুর রহমান। তাঁর অভিযোগ, পরিপক্ব না হতেই ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলছেন চাষিরা। আর এ কারণে লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিপক্ব হওয়ার পর পেঁয়াজ ওঠানো হলে চাষিরা অবশ্যই লাভ পাবেন।