সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি, আদালতকে পুলিশ
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ। আজ রোববার অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়।
আজ দুপুর আড়াইটায় সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে হাইকোর্টের দেওয়া রুলের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিচারপতি কামরুল ইসলাম ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বেঞ্চে এই শুনানি হবে।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন বিষয়টির শুনানিতে আদালতকে জানানো হবে।’
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির উল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, এসবি, সিআইডি, র্যাব, ডিএমপি ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে আলাদা আলাদা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সব পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছে, সালাহ উদ্দিনের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।
এর আগে ১২ মার্চ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই দিন দুপুরে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
আবেদনের শুনানিতে রুলের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘পুলিশের আইজির মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছি যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার বা আটক করেনি। রাজনীতিবিদরা নিজে পলাতক থেকে অনেক সময় রাজনৈতিকভাবে ফায়দা লোটার জন্য এ ধরনের আচরণ করে থাকেন।’
এ সময় আদালত অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করছি, তাঁকে আটক করা হয়নি। কিন্তু তিনি নিখোঁজ রয়েছেন, নাগরিক হিসেবে তাঁকে উদ্ধার করাটাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব। পুলিশের এ বিষয়ে জিডি না নেওয়ার কোনো কারণ দেখি না।’ পুলিশ কেন জিডি নেয়নি, সে প্রশ্ন রাখেন আদালত।
আদালত আরো বলেন, ‘তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তি হতে পারেন, তাই বলে কি আপনারা জিডি না নিয়ে এ ধরনের আচরণ করবেন?’
উল্লেখ্য, ১০ মার্চ থেকে নিখোঁজ রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’ এমনকি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’
এ ঘটনার পরের দিন বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ কোথায় আছেন বা তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না, তা পরিষ্কার নয়। তদন্তের পরই এ বিষয়ে স্পষ্ট বলা যাবে। ওই দিন মিরপুরে পুলিশ স্টাফ কলেজে সার্ক পুলিশ অফিসার ট্রেনিং কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার (পরিষ্কার) নয়। আমাদের পাশে দেখেন আইজিপি সাহেবও আছেন। তিনি এবং আমি দুজনই বলছি, বিষয়টা আমাদের কাছে ক্লিয়ার নয়। তিনি কোথায় গিয়েছেন কিংবা কেউ নিয়েছেন, বিষয়টি আমাদের কাছে এখনো ক্লিয়ার নয়। কাজেই একটু সময় লাগবে। তদন্ত করে দেখি বিষয়টা কী, জেনে নিই। তারপর আমরা জানাব।’