মেহেরপুরে মাজার উচ্ছেদের প্রতিবাদে বাউলদের মানববন্ধন
মেহেরপুরের গোভীপুরে শাহসুফী বাগু দেওয়ানের (বাগুওয়াল পীর) মাজার ভাঙচুর করে উচ্ছেদ, গাছপালা কাটা ও লুটপাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে মরমীসাধক ভক্ত ও অনুরাগীদের ব্যানারে জেলার বাউলরা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী মেহেরপুর প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে তারা এ কর্মসূচি পালন করে। কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দেন জেলা তরিকত ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাউল সালাহ উদ্দিন। বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মজনুল হক বাউল, মেহেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক লোকজ সাহিত্যিক আবদুল্লাহ আল আমিন, প্রবীণ সংগঠক নাসির উদ্দিন মিরু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আলতাফ হোসেন, নাট্যকার মশিউজ্জামান বাবু, সাংস্কৃতিককর্মী মাহবুবুল হক মন্টু, বাগুদেওয়ান দরবারের খাদেম আলম পাগলা, বাউল ওসমান আলী, ওমর আলী, সাজেদুল, রফিক আলী আল চিশতী, মোখলেসুর রহমান, শিক্ষক রাইহানুল হক পোলেন প্রমুখ। মানববন্ধন ও সমাবেশে জেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাউল ও সাংস্কৃতিককর্মীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সব ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করবে। একটি জঙ্গি মৌলবাদী গোষ্ঠী গোভীপুরের বাগুদেওয়ানের দরবারটি ভাঙচুর করেছে। আমরা তাদের বিচার চাই এবং দরবারটির পুনর্নির্মাণ চাই। অবিলম্বে এ দাবি না মানা হলে বাউল সাধকদের পক্ষ থেকে আরো কঠোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাদকের আখড়ার অভিযোগ তুলে সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজামালসহ গোভীপুর গ্রামবাসী দরবার শরীফে গিয়ে দরবারের খাদেমসহ ভক্তদের বের করে দিয়ে উচ্ছেদ শুরু করেন। পরে তাঁরা অগ্নিসংযোগ করে এবং সেখানে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির হাজার খানেক গাছ কেটে গুঁড়িয়ে ফেলেন। বেলা ১১টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে বাগুদেওয়ানের রওজাসহ সব স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়।
পরে বৃহস্পতিবার ওই ঘটনায় মেহেরপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আমলি আদালতে মাজারের সহকারী খাদেম মো. রাজিব বাদী হয়ে সদরের বুড়িপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহ জামাল, তাঁর সহযোগী মো. শান্ত, মো. মাসুম, মো. বিল্লাল, মো. হামিদুল ও মো. আলোসহ আরো অজ্ঞাত ৭০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।