তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বিষয়ে কোনো লেনদেন হয় না। রাজাকার, সামরিক, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সঙ্গে কোনো আপসরফা হয় না।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত জাসদ নেতা কাজী আরেফ আহমেদের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকীর সভায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি এসব কথা বলেন।

কাজী আরেফ আহমেদ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে যদি নিজের পথে,গণতন্ত্র, বৈষম্যহীন সমৃদ্ধির পথে চলতে হয়, তবে পাকিস্তানি, সামরিক ও বেগম জিয়ার রেখে যাওয়া জঞ্জাল ঝেড়ে ফেলতে হবে। এর বাস্তবায়নের ওপরই নির্ভর করছে শান্তি-সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ গড়ে উঠবে কি না।’

হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জঙ্গি-জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রদায়িক জঞ্জালকে যারা প্রশ্রয় দেয়, সেই খালেদা জিয়াকেও রাজনীতি থেকে বাদ দিতে হবে। আজ ২০১৬ সালে দাঁড়িয়ে দেশকে নিরাপদ পথে পরিচালিত করতে যে জঙ্গি-রাজাকার-খালেদা জিয়াকে বাদ দেওয়ার বিকল্প নেই, তা সবাইকে অনুধাবন করতে হবে।’

এ সময় কাজী আরেফ আহমেদের রাজনৈতিক জীবনের ওপর আলোকপাত করে জাসদ নেতা বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ষাটের দশকের বিখ্যাত ছাত্রনেতা কাজী আরেফ ছিলেন সেই গুটিকতক তরুণদের একজন, যাঁরা পাকিস্তানের ভেতরে থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সংগ্রাম-যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর পাশে থাকা মানুষদের অন্যতম হিসেবে কাজী আরেফের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘কাজী আরেফ অমর ছিলেন, অমর থাকবেন।’

এর আগে সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ৬২ নিউকিয়াস সদস্য ও সাবেক জাসদ সভাপতি শহীদ কাজী আরেফ আহমেদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন হাসানুল হক ইনু। সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধান, জাসদ নেতা মো. খালেদ, শফিউদ্দীন মোল্লা, আনোয়ারুল ইসলাম বাবু, নাদের চৌধুরী, নূরুন্নবী, টুটুল সরকার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি সামছুল ইসলাম সুমনসহ জাসদ নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি খন্দকার হেনা মাসুদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার সময় সাবেক সচিব ও ইতিহাসবিদ সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা ও অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার, জাতীয় প্রেসকাব সদস্য ও বিশিষ্ট সাংবাদিক মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক  ভূঁইয়া, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা ময়নুল হক মঞ্জু, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল, জাতীয় যুব জোটের সদস্য সালমা সুলতানা, বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়, বঙ্গবন্ধু শিশু কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মুশফিকুর রহমান মিন্টু প্রমুখ প্রয়াত কাজী আরেফ আহমেদের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং তার স্মৃতি রক্ষার্থে এগিয়ে আসার জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।