‘সালাহ উদ্দিনের খোঁজে অভিযান চালাইনি, তবে চেষ্টা অব্যাহত’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে খুঁজে বের করতে হাইকোর্টের দেওয়া রুলের শুনানি আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। বিচারপতি কামরুল ইসলাম ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
আজ শুনানিতে অংশ নিয়ে সালাহ উদ্দিন আহমেদ ‘নিখোঁজের’ ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, পুলিশ অধিদপ্তর, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) দেওয়া প্রতিবেদনগুলো আদালতকে পড়ে শোনান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ওই সব প্রতিবেদনে বলা হয়, সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আদালত জানতে চান, ‘আপনারা তাঁকে (সালাহ উদ্দিন) খুঁজে বের করতে কোথাও অভিযান চালিয়েছেন কিনা?’ জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এখনো অভিযান চালাইনি, তবে তাঁকে খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত আছে।’
শুনানিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আদালতকে বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ প্রতিবেদনগুলো আমাদের গতকাল দেওয়ার কথা থাকলেও তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) আজ শুনানির সময় ৩টা ১২ মিনিটে আমাদের দিয়েছে। তাই আমরা প্রতিবেদনগুলো দেখার সুযোগ পাইনি।’
আদালতের কার্যক্রমের এ পর্যায়ে নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যায়। এ ছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত হাইকোর্ট বন্ধ থাকবে।
হাতে আর সময় না থাকায় অবকাশের পর শুনানির সময় নির্ধারণ করা যায় কিনা তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের কাছে জানতে চান আদালত। তাঁরা সম্মতি দিলে আগামী ৮ এপ্রিল শুনানির নতুন দিন ধার্য করেন দুই বিচারপতি।
গত ১২ মার্চ বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে কেন খুঁজে বের করা হবে না এবং রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
এর আগে ওই দিন দুপুরে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি আবেদন করেন তাঁর স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। আবেদনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের আইজিসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
গত ১০ মার্চ থেকে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তাঁকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তাঁর পরিবার ও দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের সন্ধান চেয়ে ১১ মার্চ রাতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গুলশান ও উত্তরা পশ্চিম থানায় যান তাঁর স্ত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ। তবে কোনো থানাই তাঁর জিডি গ্রহণ করেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’ এমনকি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উপকমিশনার মাসুদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’
এ ঘটনার পরের দিন বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ কোথায় আছেন বা তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন কি না, তা পরিষ্কার নয়। তদন্তের পরই এ বিষয়ে স্পষ্ট বলা যাবে।