‘চার শিশু হত্যায় শাহেদ অপহরণ থেকে মাটিচাপা পর্যন্ত ছিলেন’
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু হত্যার ঘটনায় আসামি শাহেদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার বিকেলে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. কাউছার আলমের আদালতে তিনি এই জবানবন্দি দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তাদির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিবি পুলিশের একটি সূত্র দাবি করেছে, এর আগে আসামি শাহেদকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন শাহেদ। এ সময় এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের নামও জানান।
ডিবি পুলিশের ওই সূত্রের ভাষ্যমতে, চার শিশু হত্যাকাণ্ডে শাহেদসহ মোট ৯ জন অংশ নেন। শাহেদ নিজে চার শিশুকে অপহরণ থেকে শুরু করে হত্যা ও লাশ মাটিচাপা দেওয়া পর্যন্ত ঘাতক দলের সঙ্গে ছিলেন।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় এর আগে আরো চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এঁরা হলেন হত্যা মামলার মূল আসামি আবদুল আলী বাগালের দুই ছেলে রুবেল ও জুয়েল এবং আরজু ও শাহেদ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত গভীর রাতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ৯-এর শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের একটি দল সিলেটের বিশ্বনাথ এলাকা থেকে আসামি শাহেদকে আটক করে। পরে তাঁকে হবিগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
আটকের পর র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার কাজী মনিরুজ্জামান আসামি শাহেদকে চার শিশু হত্যাকাণ্ডের ‘নাটের গুরু’ আখ্যায়িত করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, শিশুদের অপহরণ থেকে খুন করা পর্যন্ত জড়িত ছিলেন আসামি শাহেদ।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু নিখোঁজ হয়। পাঁচদিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে গ্রামের অদূরে বালিমাটিতে পুতে রাখা অবস্থায় তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিশুরা হলো বাহুবল উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের মো. ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), তার দুই চাচাতো ভাই আবদুল আজিজের ছেলে একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও আবদাল মিয়ার ছেলে একই বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র মনির মিয়া (৭) এবং তাদের প্রতিবেশী আবদুল কাদিরের ছেলে সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র ইসমাঈল হোসেন (১০)।