সাগরে বিধ্বস্ত বিমান থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার

বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার নাজিরারটেক পয়েন্টে বিধ্বস্ত কার্গো বিমানের নিখোঁজ দুই যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল ৪টায় বিমানের ককপিট থেকে এ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
এঁরা হলেন বিমানের নেভিটের কালটুরভ এবং কো-পাইলট জুলুডিমির। এ নিয়ে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা তিনজনে দাঁড়াল।
এর আগে বিমানের পাইলট গোফরাড নিহত হন। এ ছাড়া এ দুর্ঘটনায় আহত ক্রু ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ নোলরী কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চারজনই ইউক্রেনের নাগরিক।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত জানান, উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যেই সকাল ৮টার ৫০ মিনিটের দিকে যান্ত্রিক ক্রটির কারণে পোনা বহনকারী এই কার্গো বিমানটি নাজিরারটেকের অদূরে সাগরে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স নৌবাহিনীর মেরিটাইম প্যাট্রল এয়ারক্রাফ্ট নামে একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার এবং কোস্টগার্ড স্থানীয় জেলেদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। দুপুরের দিকে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ অপরাজেয় দুর্ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। বিকেল ৪টার দিকে বিধ্বস্ত বিমান থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান সাধন কুমার মোহন্ত।
স্থানীয় কাউন্সিলর আকতার কামাল জানান, কক্সবাজার উপকূলের নাজিরারটেকের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে অন্তত অর্ধশত নৌকা নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও জেলেরা দুর্ঘটনাস্থলে যায়। তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সাগরে ভাসমান অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক জসীম উদ্দীন জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে। উদ্ধার করে তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ছাড়া বিকেল ৪টায় বিমানের ককপিট থেকে দুজনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন জসীম উদ্দিন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক নোবেল কুমার বড়ুয়া জানান, হাসপাতালে আনার বেশ আগেই পাইলট গোফরাড মারা যান। আহত ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার কুলিশ নোলরির অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মাথায় ও ডান পায়ে গুরুতর আঘাত রয়েছে। মাথা ও পায়ের অপারেশন করতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তাঁদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে।
‘ট্রু ভিশন’ নামে পোনাবাহী কার্গো বিমানটি পরিচালনা করতেন মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক। এই কার্গো বিমানে করে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার থেকে খুলনা, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠিসহ বিভিন্ন জেলায় পোনা পরিবহন করে আসছিলেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, নিহতদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।