অর্থ চুরির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীরও পদত্যাগ চায় বিএনপি

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পর প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছে বিএনপি।
দলটির পক্ষ থেকে আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
অবিলম্বে চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশে এখন আবারও সেই দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। জাতি এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায়।... শুধু অর্থমন্ত্রী এবং গভর্নরের পদত্যাগেই বাংলাদেশের পরিত্রাণ মিলবে না, এদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের মাধ্যমেই দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের মুক্তি নিশ্চিত হবে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘রিজার্ভের অর্থ কারো পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ নয়। রক্তপানি করা আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ হিসেবে সংরক্ষিত হয়।
বেসিক ব্যাংক, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংক এবং পূঁজিবাজারের অর্থ লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো কঠোর অবস্থান না থাকার ফলে আজ কেন্দ্রীয় ব্যাংকও হলো লুণ্ঠনের শিকার।’
সংবাদ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে বিএনপির সমর্থকদের ওপর হামলা, হুমকি-ধমকি, প্রচারের বাধা দেওয়ার বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
বিভিন্ন স্থানে মিথ্যা মামলার নামে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানির অভিযোগও করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীভূত স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভু শেখ হাসিনা, কথা বলার স্বাধীনতাকে শিকল পরিয়েছেন, যাঁরা সত্য অকপটে উচ্চারণ করেন তাঁদেরকে অপরাধী সাজিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহীর তকমা দাগিয়ে দিচ্ছেন। গণতন্ত্রকে কালাপানিতে পাঠিয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে হাসিনা নির্দয় একদলীয় শাসনের সুঁচ ফোটাচ্ছেন জনগণের শরীরে অবিরতভাবে, যাতে তারা প্রবল অপশাসনকে উল্টে দিতে ঘুরে দাঁড়াতে না পারে। অবরুদ্ধ পরিবেশেও যতটুকু কথা বলা যায়, সেটিকেও উচ্ছেদ করার জন্য নতুন কালো আইন তৈরি করার খসড়া প্রস্তুত হচ্ছে বলে আমরা জেনেছি।’
এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসন্ন বিএনপির কাউন্সিলের জন্য রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশাপাশি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশ বরাদ্দ দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবারও অনুরোধ জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির মতো দেশের একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের পক্ষে এত ছোট পরিসরে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করা খুবই দুরূহ ব্যাপার। আমরা আবারও অনুরোধ করছি, কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের স্বাচ্ছন্দ্যে বসার জন্য বরাদ্দকৃত ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ ঢাকা-রমনার চৌহদ্দির পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি অংশ বরাদ্দ দিতে।’
এ সময় রিজভী আরো জানান, বিএনপির কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে একটি প্রতারকচক্র তাঁর নামে মানুষের কাছ থেকে চাঁদা নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রতারকচক্র ০১৭১১১৯০০০৪, ০১৭৬৪৭৪৬৬৬১ এই নম্বরগুলোসহ আরো কিছু নম্বর ও ফেসবুকের মাধ্যমে আমার নামে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিএনপির কাউন্সিলের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। এরা সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। এদের ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’