চকরিয়ায় বিএনপির প্রার্থীর পথসভায় হামলা, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০
কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনী পথসভা চলাকালে এই হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নুরুল ইসলাম হায়দারের শরীরের একাধিক অংশে গুলি লেগেছে। এ ছাড়া এই ঘটনায় মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে থাকা জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হকও গুরুতর আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার রাত ৮টার দিকে চকরিয়া পৌর এলাকার গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে এই ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনা চকরিয়া থানা থেকে মাত্র ২৫০ গজ দূরে।
এই ঘটনায় মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দার, তাঁর গাড়িচালক, নেতাকর্মীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হক, নুরুল ইসলাম হায়দারের গাড়িচালক এনামুল হক ও চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়াও রয়েছেন।
বিএনপির দাবি, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরাই এই হামলা চালিয়েছে।
পুলিশ অবশ্য ভিন্ন দাবি করেছে। পুলিশের দাবি, নুরুল ইসলামকে গুলি করা হয়নি। তিনি ধস্তাধস্তিতে রাস্তায় পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার পর পরই নুরুল ইসলাম হায়দারের ওপর হামলাকারীরা চকরিয়া আদালত এলাকায় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী শিব্বির আহমদের প্রচারের কাজে থাকা মাইক ভাঙচুর করে।
চকরিয়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ফখরুদ্দিন ফরাজী জানান, সন্ধ্যার পর চকরিয়ার থানার অদূরে গ্রামীণ ব্যাংকের কাছে বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দারের পথসভায় যোগদান করা মাত্র এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ফখরুদ্দিন ফরাজী দাবি করেন, পথসভাস্থলের কাছাকাছি এলে একদল দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে বিএনপি প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দারকে গুলি করে। তাঁর মাথা, কোমর ও বুকে গুলি লেগেছে।
বিএনপি নেতা ফখরুদ্দিন ফরাজী জানান, গুলিবিদ্ধ ও আহতদের দ্রুত চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেয়র পদপ্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দারকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নুরুল ইসলাম হায়দারের স্ত্রী রিফাত সাবরিনসহ পরিবারের একাধিক সদস্য এই ঘটনার পর অচেতন হয়ে পড়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, নুরুল ইসলাম হায়দার গুলিবিদ্ধ হননি। তবে তিনি সামান্য আহত হয়েছেন।
ওসি দাবি করেন, পথসভা শেষ করে ফেরার পথে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর একটি মিছিল পার হওয়ার সময় দুইপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ওই সময় রাস্তায় পড়ে গিয়ে বিএনপি প্রার্থী নুরুল ইসলাম হায়দার পায়ে ও বুকে আঘাত পেয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম খান জানান, নুরুল ইসলাম হায়দার ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগী হওয়ায় তাঁর অনুরোধে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আলমগীর চৌধুরীর সঙ্গে রাতে যোগাযোগ করা হলে তাঁর কর্মীরা এই ধরনের কোনো হামলা করেনি বলে দাবি করেন।