শ্যামনগরে বিএনপির সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর, আহত ৮
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ধুমঘাট গ্রামে ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিএনপির সমর্থক তিনটি পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে হামলার সময় বাড়ির খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।
প্রার্থী ও এলাকাবাসী জানান, ভাঙচুরে বাধা দেওয়ায় হামলাকারীদের হাতে আহত হয় আটজন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যেতেও বাধা দেওয়া হয়। পরে বিকল্প পথে তাদের শ্যামনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ইউনিয়নের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জিএম সাদেকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন ‘এ ঘটনার জন্য দায়ী একই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জি এম শোকর আলী ও তাঁর সমর্থকরা। তারাই পরিকল্পিতভাবে এ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।’
তবে শোকর আলী বলেছেন, তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি বা তাঁর কোনো লোকজন এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন বলেও দাবি করেন তিনি। শোকর আলী জানান, এটি একটি সাজানো নাটক।
আহতরা হলেন- আবদুল ওহাব, আলম, আবদুল হামিদ, আবুবকর গাইন, আছিয়া খাতুন, শিল্পী খাতুন, দাউদ গাইন ও আবদুল।
সাদেকুর রহমানের নির্বাচনী কর্মী আবদুল ওয়াহাব বলেন ‘রাতে শোকর আলীর সমর্থকরা ধুমঘাটের সঞ্জয় কুমারের বাড়িতে চড়াও হয়ে তার পরিবারের সদস্যদের মারপিট করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা তার বাড়ির চারটি ঘর ভাঙচুর করে। ধান ও খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়।’ এরপর তারা একই গ্রামের দাউদ গাইন ও আবুবকর গাইনের বাড়ির দুটি ঘর ভাঙচুর করে। তিনি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে তাদের রক্ষা করতে গেলে আমাদের ওপরও চড়াও হয় শোকর আলীর লোকজন। এ সময় আমাদের ব্যবহৃত কয়েকটি মোটরসাইকেল ও ভ্যান ভেঙে পানিতে ফেলে দেয় তারা।’ তিনি জানান, হামলায় অংশ নেন শোকর আলীর সমর্থক গোলাম মোস্তফা বাংলা ভাই, কাদের, রুবেল, জাহিদ, রায়হান, শাহজাহান, আনিসুর, সেবাদুলসহ ২০ থেকে ৩০ জন।
খবর পেয়ে শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক ও উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম একদল পুলিশ সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। তার আগেই হামলাকারীরা এলাকা ত্যাগ করে। ওসি জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচার চালাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী ইব্রাহীম হোসেন। তিনি জানান, তাঁর লোকজনকে প্রতিহত করে মাইক কেড়ে নিয়ে ভাঙচুর করা হচ্ছে। লাঠিসোঁটা ও লোহার রড হাতে নিয়ে তারা মহড়া দিয়ে তাঁর প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইব্রাহীম হোসেন আজ বুধবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার মনোনয়নপত্র আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মাহবুবুর রহমানের বাধার মুখে জমা দিতে ব্যর্থ হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হই। সময় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও হাইকোর্ট আমার মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার নির্দেশ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তাকে। সে অনুযায়ী আমি ১১ মার্চ আমার মনোনয়নপত্র জমা দেই। কিন্তু প্রচারে এসে চরম বাধার সম্মুখীন হচ্ছি। এ ব্যাপারে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ওসিকে লিখিতভাবে জানিয়েও কোনো ফল পাচ্ছি না।’ তিনি এর প্রতিকার দাবি করেন, ‘নির্বাচনে আমার জয় নিশ্চিত জেনে প্রতিপক্ষ এমন আচরণ করছে।’