ভোট গ্রহণ স্থগিতের ঘটনায় মামলার নির্দেশ
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/03/24/photo-1458833503.jpg)
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোটগ্রহণ স্থগিতের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সংশ্লিষ্ট ৫১ প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ বৃহস্পতিবার পাঠানো নির্দেশনায় নির্বাচনে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত যেই হোক না কেন তাদের নাম উল্লেখ করে মামলা করতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তা জানান, স্থগিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে যে প্রার্থীর পক্ষে বেশি ভোট পড়েছে, ইসি ধরে নিয়েছে ওই প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকরা এ গোলাযোগের সঙ্গে জড়িত। এজাহারে তাদের নাম যাতে বাদ না পড়ে সে বিষয়টি লক্ষ রাখতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
ইসি সূত্র জানায়, প্রথম দফা নির্বাচনে ৬৫টি ভোটকেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় ১৪টি কেন্দ্র রয়েছে। ওই সব কেন্দ্রের ১১টিতে পুলিশের গাফলতি থাকায় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনটি কেন্দ্রে পুলিশ অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে গিয়েছিল। এ ঘটনায় সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার এবং পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) কমিশনে হাজির হয়ে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নির্বাচন কমিশনার বিষয়টি জানিয়ে বলেন, সহিংসতার ঘটনায় কমিশন যাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সেজন্য চাপ আছে। তবে কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. সামসুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জ্ঞাত বা অজ্ঞাত যাই হোক না কেন, জড়িত সব ব্যক্তিকে আসামি করে থানা মামলা রুজু করতে নির্বাচন কমিশন নির্দেশনা প্রদান করেছে।’
যেসব ইউপিতে মামলা করতে বলা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপল ইউপি, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার সয়না রঘুনাথপুর, শিয়ালকাঠী, চিরাপাড়া-পারসাতুরিয়া, মঠবাড়ীয়া উপজেলার ধানী সাফা, দাউদখালী, টিকিকাটা, বড়মাছুয়া, ভাণ্ডারিয়ার ইকড়ি, লক্ষীপুরের কমলনগর উপজেলার পাটারিরহাট, বরগুনা সদরের এমবালিয়াতলী, ভোলা সদরের বাপ্তা, ধনিয়া, দৌলতখানের চরখলিফা, কুমিল্লার দেবিদ্বারের ফতেহাবাদ, ভানী, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বর, পটুয়াখালীর সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া, কলাপাড়ার চাকামইয়া, দশমিনা সদর, ডাকুয়া, চর বিশ্বাস, কলাগাছিয়া, বাউফলের সুর্যমনি, নওমালা, ব্রহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মানিকপুর, কক্সবাজারের মহেশখালীর বড়মহেশখালী, বরিশালের উজিরপুরের হারতা, আগৈলঝাড়ার বাকাল, বগধা, সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর, চরকাউয়া, বাকেরগঞ্জের চরামদ্দি, নিয়ামতি, বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা, রহমতপুর, মেহেন্দীগঞ্জের চানপুর, বানারীপাড়ার সৈয়দকাঠী এবং সিলেট সদরের টুকের বাজার ইউপি।
৬৪০ ইউপির ফলাফল
প্রথম ধাপের ভোটের দু’দিন পর ৭১২ ইউপির মধ্যে ৬৪০টির ফল জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যাতে দুই-তৃতীয়াংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হয়েছেন।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত যে ৬৪০টি ইউপির ফল ঘোষণা হয়েছে তার ৪৬৯টিতে আওয়ামী লীগ ও ৪৯টিতে বিএনপি প্রার্থী চেয়ারম্যান হয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৭ জন চেয়ারম্যান হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টি (জেপি) জয় পেয়েছেন সাতটিতে। এর বাইরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলোর মধ্যে জাসদ তিন ও ওয়ার্কার্স পার্টি দুজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এ ছাড়া জাতীয় পার্টির দুজন ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
নবম ইউপি ভোটের প্রথম ধাপে ৭১২টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হয়। এরমধ্যে ৫৪ ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।