বান্দরবানে ভোটকেন্দ্র দখল, প্রার্থী আহত

বান্দরবানে ছয়টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল, হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীসহ সাতজন আহত হয়েছে। আজ শনিবার তৃতীয় দফায় ভোট চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, জেলার ছয়টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নের ২২৭টি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুপুরে লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের চাম্বী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বহিরাগতরা হামলা চালায়। এ সময় তারা এজেন্টদের বের করে দিয়ে একতরফা জালভোট দেয়।
এ সময় বহিরাগতদের সঙ্গে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নূরুচ্ছফা মাস্টারের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নূরুচ্ছফা মাস্টারসহ ছয়জন আহত হয়।
অপরদিকে ফাইতং ইউনিয়নের দৈল্লারছড়ি এবং নয়াপাড়া ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে দুটি কেন্দ্র দখল করে নেয় বহিরাতগরা। কেন্দ্র দুটির ভোটগ্রহণ সাময়িক বন্ধ ছিল। বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কেন্দ্র দখল করে প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে জালভোট দেয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নূরুচ্ছফা মাস্টার অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে একতরফা জালভোট দিয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো ভূমিকা রাখেনি। আমি এ অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করছি।’
এদিকে দুটি ইউনিয়ন ছাড়াও জেলার বাকি ২৩টি ইউনিয়নে বড় ধরনের কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সকাল থেকেই জেলার রেইছা, সুয়ালক, মাঝেরপাড়া স্কুল কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে দেখা গেছে। ভোটকেন্দ্রগুলোতে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
জেলার দুর্গম যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ২৬টি ভোট কেন্দ্রসহ ২২৭টি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন ছিল। এ ছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলে ছিলেন।
জেলার ২৫টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ-বিএনপি মনোনীত এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৯৪ জন প্রার্থী। এ ছাড়া সাধারণ ওয়ার্ডে ৭০৮ জন ইউপি এবং সংরক্ষিত পদে ২১৬ জন নারী সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ইউনিয়নগুলোতে মোট ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে এক লাখ ৩৮ হাজার ৮১৪ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৭১ হাজার ৭১৪ জন এবং নারী ভোটার ৬৭ হাজার ১০০ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ২২৭টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৩২টি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া জেলার ২৫টি ইউনিয়নেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল।