ঝড়ে ২০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎবিহীন পঞ্চগড়
ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে গাছ ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে পুরো জেলা। গতকাল মঙ্গলবার ঝড়ের সময় রাত ৯টা থেকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। দীর্ঘ ২০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
ঝড়ে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। কোনো কোনো এলাকা রাস্তাঘাটের ওপর বড় বড় গাছ ভেঙ্গে পড়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গাছ ভেঙ্গে পড়ায় বিদ্যুৎ লাইনেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বোরোধান, পাট, ভুট্টা, মরিচ, আম, লিচু, কাঁঠাল, তিল, টমেটোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ঘরবাড়ির ওপরে গাছপালা ভেঙ্গে পড়েছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
জেলার সদর উপজেলার পঞ্চগড় ইউনিয়নের ঝাকুয়াখালী এলাকার আব্দুস সামাদ ভাদুর এক একর জমির পাটক্ষেত সম্পূর্ণটাই নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পাতাও নেই, কুশিও নেই এমন অবস্থায় কয়েকটি গাছ দাঁড়িয়ে আছে। এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে তা নিয়েই তাঁর চিন্তা।
জেলা শহরের উত্তর জালাসীপাড়া এলাকার খতিবর রহমনের প্রায় দুই একরের পাকা ধান সম্পূর্ণ ঝরে গেছে। শুধু গাছ দাঁড়িয়ে আছে। সকালে ধানক্ষেতের এ অবস্থা দেখে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একই এলাকার সুজন আলীর দেড় একরের তিল, পঞ্চগড় ইউনিয়নের মোলানীপাড়া এলাকার জুলহাসের এক একর ভুট্টাক্ষেত পড়ে গেছে।
পঞ্চগড় ইউনিয়নের ডুডুমারী এলাকার মফিজুল ইসলামের এক একর টমেটোক্ষেতের টমেটো ঝড়ে গেছে। গাছগুলো নুইয়ে পড়েছে মাটিতে।
এ ছাড়া পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ, চাকলাহাট ও পঞ্চগড় ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ভোর থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। অসংখ্য পিলারের তাঁর ছিড়ে পড়ায় তাঁদেরও হিমশিম খেতে হচ্ছে। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি পঞ্চগড় বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী আহসানুল কবির।
এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন মুঠোফোন ব্যবহারকারীরা। চার্জ দিতে না পারায় অনেকের মুঠোফোনও বন্ধ হয়ে গেছে।