জেএসএসের বিরুদ্ধে মাঠে বাঙালি সংগঠনগুলো

রাঙামাটিতে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ডাকে অবরোধসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে একসঙ্গে মাঠে নেমেছে জেলার বাঙালি সংগঠনগুলো।
জেএসএসের কর্মসূচিগুলো উসকানিমূলক এবং রমজান মাসের পবিত্রতা নষ্টকারী বলেও অভিযোগ করছেন বাঙালি সংগঠনের নেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সম্প্রতি শেষ হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বরকল উপজেলার একটি কেন্দ্রের ফল বাতিল ও পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ১১ দিন ধরে বরকল উপজেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জেএসএস। এ ছাড়া রাঙামাটি জেলায় ১৩ ও ১৪ জুন দুদিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি। এরপর আগামী ১৯ থেকে ২১ জুন আবারও তিন দিনের অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হয় জেএসএসের পক্ষ থেকে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একজোট হয়ে মাঠে নেমেছে বাঙালি সংগঠনগুলো।
জেএসএসের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটির বরকল উপজেলায় কয়েকশ মানুষ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ।
বরকল উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, রাঙামাটি তথা পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সংঘাত সৃষ্টি করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার পাঁয়তারা করছেন সন্তু লারমা ও তাঁর ক্যাডাররা।
স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনে পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের নেতারা বলেন, অজ্ঞাত কারণে পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না প্রশাসন। প্রশাসন যদি অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পুরো বরকল উপজেলা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তাঁরা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন ভূষণছড়ার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মামুন, সবুর মেম্বারসহ স্থানীয় নেতারা।
এ ছাড়া অবরোধের নামে সাম্প্রদায়িক উসকানি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন ও সমমনা সংগঠনগুলো। গতকাল বুধবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম সমঅধিকার আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি জাহাঙ্গীর কামালের সভাপতিত্বে এবং যুবফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহানের পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরো বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সমঅধিকার আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর, যুবফ্রন্টের উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মুন্না ও জে এম জালোয়া, পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সাব্বির আহম্মেদ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আঞ্চলিক সংগঠন জেএসএস অবরোধের নামে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে, এর জন্য তাদের জবাব দিতে হবে। তাদের দাবিকে ‘ফালতু’ বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
বক্তারা আরো বলেন, জেএসএস ইউপি নির্বাচনে অনেক বেশি আসনে জয় পেয়েছে। তারপরও সামান্য একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে অবরোধের নামে যে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে, তার পরিণাম শুভ হবে না। জেএসএস যদি তাদের এই কর্মসূচি বন্ধ না করে, তাহলে ঈদের পরে পার্বত্যবাসী এক হয়ে লাগাতার কর্মসূচি দিয়ে পার্বত্য অঞ্চলকে অচল করে দেবে।